ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম। সাফল্যের চূঁড়ায় আরোহনকারীদের মধ্যে অন্যতম তিনি। দারিদ্র্যতা তার সাফল্যের পথে বাধা হতে পারেনি।
কীভাবে দারিদ্রতাকে জয় করতে হয়, তা তিনি আমাদের করে দেখিয়েছেন। হয়ে উঠেছেন সবার কাছে এক অনুপ্রেরণার উৎস।
১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর ভারতের তামিলনাডুর প্রত্যন্ত গ্রামে আবুল কালামের জন্ম। পরিবারের সাথে তিনি রামেশ্বরমে থাকতেন। পিতা আবুল ফকির জয়নাল আবেদীন ডিঙি নৌকা তৈরির কাজ করতেন। পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোনের পরিবার চালাতে বাবা হিমশিম খেতেন।
এ পি জে আব্দুল কালাম পরিবারের খরচ যোগাতে পড়ালেখার পাশাপাশি পত্রিকা বিক্রি করতেন। তার ছিল অসীম ধৈর্য, অধ্যবসায় ও অজানাকে জানার তীব্র কৌতূহল। ছোটবেলায় অঙ্ক কষতে খুব ভালোবাসতেন। এ কাজে তার কোন ক্লান্তি ছিল না। তিনি রামেশ্বরম এলিমেন্টারি স্কুল থেকে পাস করেন। পরে সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিষয়ে পড়াশোনা করেন।
১৯৬০ সালে তিনি ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে (ডিআরডিও) কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় কাজ শুরু করেন। তার নেতৃত্বে ১৯৮০ সালে ভারত প্রথম মহাকাশে স্যাটেলাইট ‘রোহিণী’ উৎক্ষেপণ করে।
এরপর ১৯৯৮ সালে ভারত ‘পোখরান-২‘ নামে দ্বিতীয়বারের মতো পারমানবিক পরীক্ষা চালায়। ভারতের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মহাকাশযানবাহী রকেট উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এ জন্য তাকে ‘মিসাইলম্যান অব ইন্ডিয়া’ বলা হয়। ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘ভারতরত্ন‘সহ অসংখ্য পুরস্কার পান।
ভারতের ১১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ২০০২-২০০৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
‘‘স্বপ্ন সেটা নয় যা আপনি ঘুমিয়ে দেখেন। স্বপ্ন সেটা যা আপনাকে ঘুমাতে দেয় না।” -তিনি জীবন সম্পর্কে এ রকম অসংখ্য উক্তি দিয়েছেন। যা মানবজাতির সফলতার প্রেরণার উৎস। ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি দেন।