স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ঢুকছে ভারতে আটকা পেঁয়াজ

অবশেষে দেশে ঢুকতে শুরু করেছে বিভিন্ন স্থলবন্দরে আটকে থাকা ভারতীয় পেঁয়াজভর্তি ট্রাক। শুক্রবার রাতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি বন্ধের আগে সীমান্তের আটকে থাকা পেঁয়াজ বাংলাদেশে রপ্তানির অনুমতি দেওয়ায় শনিবার থেকে আমদানি শুরু হয়।

শনিবার সকাল ১১টার পরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে এবং বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ঢুকতে শুরু করে পেঁয়াজের ট্রাক।

সোনামসজিদ দিয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাতটি ট্রাকে ১৯৯টন পেঁয়াজ দেশে ঢুকেছে। ট্রাকে কয়েক দিন পেঁয়াজ আটকে থাকায় গরমে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক তৌফিফুর রহমান বাবু জানান, গত ১৪ সেপ্টেম্বরের আগে খোলা এলসির বিপরীতে পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। অনুমতির পর শনিবার থেকে পেঁয়াজের ট্রাক সোনামসজিদ বন্দরে ঢুকতে শুরু করেছে। ওপারে ভারতের মহদিপুর স্থলবন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় দুই শতাধিক ট্রাক আটকে আছে। এছাড়া বেশকিছু ট্রাক পথে রয়েছে বন্দরে আসার জন্য। পর্যায়ক্রমে পেঁয়াজভর্তি সব ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করবে।

শনিবার দুপুরে সাড়ে ১২টা থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। তবে শুধুমাত্র যে সকল পেঁয়াজের ট্রাক অনুমোদন পেয়েছে সেই ট্রাকগুলোই দেশে প্রবেশ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন সিঅ্যান্ডএফ নেতৃবৃন্দ।

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, অনুমতি পাওয়া পেঁয়াজভর্তি ট্রাক রয়েছে ৪০-৪৫টি। এগুলো ছাড়াও ব্যবসায়ীদের আরও ১২৫ ট্রাক পেঁয়াজ ভারতে আটকা পড়ে রয়েছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মহসিন হোসেন জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনটি পেঁয়াজভর্তি ট্রাক দেশে প্রবেশ করেছে। দিন শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জানা যাবে কতগুলো পেঁয়াজের ট্রাক দেশে প্রবেশ করল।

এদিকে সীমান্তে পাঁচদিন আটকা থাকার পর শনিবার বিকেল সোয়া ৩টায় পেঁয়াজ বোঝাই ভারতীয় ট্রাকগুলি হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্টে প্রবেশ করেছে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, শুধুমাত্র গত ১৪ সেপ্টেম্বরের আগে এলসি করা পেঁয়াজগুলো ভারত সরকার রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। এ কারণে দুইশ মেট্রিকটন পেঁয়াজ শনিবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আমদানি হচ্ছে। গত পাঁচদিন ধরে সীমান্তে আটকে থাকায় কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশা করছি বাকি ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ পর্যায়ক্রমে আমদানি করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে বন্দরের ভারত অংশে কয়েকশ পেঁয়াজ বোঝাই ভারতীয় ট্রাক আটকা পড়ে। ভারত থেকে এই পাঁচদিন আমদানি না হওয়ায় বন্দরের বাজারগুলোতে দামে বড়ো ধরণের প্রভাব পড়ে। এতে করে ৪০ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে ৬৫-৭০ টাকায় বেচাকেনা হয়।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: