অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচকে সাত ধাপ এগিয়ে ১২১তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সূচক ২০১৯’ এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সংস্থাটির দেয়া তথ্যমতে, ২০১৯ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচকে ১৬৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২১তম। সূচকে ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। সূচকে বাংলাদেশের পেছনে অবস্থান করছে ভারত ও পাকিস্তান।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২৮তম। স্কোর ছিল ৫৫ দশমিক ১। আগের বছরের তুলনায় বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর এগিয়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
তাছাড়া এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ২৭তম। প্রতিষ্ঠানটি তাদের সূচকে জানিয়েছে, বাংলাদেশে সম্পত্তি অধিকার ও সরকারি নিষ্ঠার দিক থেকে এগোলেও পতন ঘটেছে বিনিয়োগ স্বাধীনতা ও রাজস্ব সক্ষমতার।
সংস্থাটির প্রণীত ২০১৯ সালের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে ভারত। তালিকায় অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচকে ভারতের অবস্থান ১২৯তম। ভারতের চেয়েও দুইধাপ নিচে ১৩১তম অবস্থানে আছে পাকিস্তান। তাছাড়া নেপালের অবস্থান ১৩৬ ও শ্রীলঙ্কার ১১৫তম। তবে চীনের অবস্থান তালিকায় ১০০তম।
তালিকায় বরাবরের মতো সবার ওপরে রয়েছে হংকং। এরপর রয়েছে সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। আর তালিকার নিচের দিকে রয়েছে উত্তর কোরিয়া, কিউবা, ভেনেজুয়েলা, জিম্বাবুয়ে, কঙ্গো আর সুদান।
প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে জানিয়েছে, দেশটির গত দুই দশকে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আনুমানিক ছয় শতাংশ। আর এর পেছনে রয়েছে মূলত ব্যক্তিখাতের খরচ ও স্থায়ী বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি।
মোট চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ক্যাটাগরি চারটির মধ্যে রয়েছে, আইনের শাসন, সরকারের আকার, নীতিনির্ধারণের কার্যকারিতা ও মুক্ত বাজার।
আইনের শাসন ক্যাটাগরির সম্পত্তির মালিকানা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত শাখায় ৩৬ দশমিক ১, বিচার বিভাগের কার্যকারিতা শাখায় ৩৪ দশমিক ৫ ও সরকারের নিষ্ঠা বিভাগে ২৪ দশমিক ৪ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ।
সরকারের আকার নামক ক্যাটাগরিতে করের বোঝা শাখায় ৭২ দশমিক ৭, সরকারি ব্যয় শাখায় ৯৪ দশমিক ৫ ও রাজস্ব সক্ষমতা শাখায় ৭৭ দশমিক ৬ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ।
নীতিনির্ধারণের কার্যকারিতা ক্যাটাগরির ব্যবসায়িক স্বাধীনতা শাখায় ৫০ দশমিক ৯, শ্রমের স্বাধীনতা শাখায় ৬৮ দশমিক ২ মুদ্রানীতি শাখায় ৬৯ দশমিক ৯ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ।
তাছাড়া মুক্ত বাজার ক্যাটাগরির বাণিজ্য স্বাধীনতা শাখায় বাংলাদেশ পেয়েছে ৬৩ দশমিক ৩, বিনিয়োগ স্বাধীনতা শাখায় ৪৫ ও আর্থিক স্বাধীনতা শাখায় ৩০ পয়েন্ট পেয়েছে।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশন প্রতিবছর ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচক’ প্রকাশ করে থাকে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার মাত্রা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আইনের শাসন, সরকারি আয়-ব্যয়ের পরিমাণ, নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নগত দক্ষতা এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যগুলোকে ভিত্তি করে নম্বর হিসেব করা হয়।
টাইমস/এইচইউ