টাইলস রপ্তানির নামে টাকা পাচার: কমার্স ব্যাংকের ১১ কর্মকর্তা বরখাস্ত

টেরাকোটা টাইলস রপ্তানির নামে টাকা পাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), বর্তমান উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) সহ শীর্ষস্থানীয় ১১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

গত শনিবার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় নেওয়া হলেও রোববার বরখাস্তের এ আদেশের সিদ্ধান্ত কর্মকর্তাদের জানানো হয়।

সোমবার সিদ্ধান্ত জানার পর বরখাস্তকৃত কর্মকর্তাদের অনেকেই ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগে রিপোর্ট করেছেন।

সাময়িক বরখাস্তকৃত কমার্স ব্যাংকের কর্মকর্তারা হলেন সাবেক এমডি ও বর্তমানে কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের এমডি আর কিউ এম ফোরকান, ডিএমডি ও প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা কাজী রিয়াজুল করিম, ট্রেজারি বিভাগের প্রধান মো. কামরুজ্জামান, প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন, দিলকুশা শাখার ব্যবস্থাপক ফকির নাজমুল আলম ও অপারেশন ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম, নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও শাখার ব্যবস্থাপক হাসান ফারুক, ঢাকার মৌলভীবাজার শাখার অপারেশন ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম, প্রধান কার্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিনুজ্জামান ও ফারহানা রাজ্জাক, একই বিভাগের কর্মকর্তা জামাল হোসেন। এরা সবাই টাকা পাচারের সময় দিলকুশা শাখা ও প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ২০০ কোটি টাকার মাটির তৈরি টেরাকোটা টাইলস রপ্তানি করে এসবি এক্সিম নামের একটি প্রতিষ্ঠান। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি বিল কিনে ১৯০ কোটি টাকা দেয় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের দিলকুশা শাখা। তবে রপ্তানির বিপরীতে ২০০ কোটি টাকা দেশে আসছে না।

অভিযোগ রয়েছে এসবি পুণ্য গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহজাহান বাবলু সেই টাকার সুবিধা ভোগ করছে। এতে তাকে সহযোগিতা করেছে বরখাস্ত হওয়া কমার্স ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

আরও জানা গেছে, বিদেশি যেসব ব্যাংক থেকে রপ্তানি আদেশ এসেছিল, তার চারটিরই নিজ দেশে কার্যক্রম নেই, পরিচালনায় অনুমোদনও নেই। এসব ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনে বৈশ্বিক ও দেশীয় নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থ পাচারের তদন্ত সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ নিয়ে অনুসন্ধান শেষে বলেছে, শাহজাহান বাবলু ব্যাংকের সহায়তায় বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আবার রপ্তানি বিলের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন ১৯০ কোটি টাকা। রপ্তানির বিপরীতে সরকারি নগদ সহায়তা নেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছিল।

 

টাইমস/এএইচ/এসআই

Share this news on: