চঞ্চলের ‘হাওয়া’য় বুলবুলের প্রভাব

অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে হোটেলে কাটছে তার সময়। গত ১৩ অক্টোবর থেকে টানা ২৫ দিন ধরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ছিলেন চঞ্চল। এরপর ‘বুলবুল’র প্রভাবে জাহাজ, ট্রলারসহ সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় আর ঢাকায় ফিরতে পারেননি তিনি। আটকা পড়ে হোটেলেই থাকতে হচ্ছে এই অভিনেতাকে।

জানা গেছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপে শুরু হয় ‘হাওয়া’ সিনেমার শুটিং। টানা কাজের মধ্য দিয়ে পরিচালক শেষ করতে চান ছবিটির কাজ। এই অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে বন্ধ হয়ে যায় ছবিটির কাজ। সাগরে জাহাজ ও ট্রলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ঢাকাতেও ফিরতে পারেনি তারা। আটকা পড়েন ছবিটির পুরো টিম। তাই শুক্রবার থেকেই শুটিং বন্ধ রেখে হোটেল রুমেই কাটছে তাদের সময়।  

এদিকে রোববার দুপুর থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র অবস্থান ক্রমান্বয়ে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। রীতিমত ভয়ংকর অবস্থা ধারণ করেছে এই ঘূর্ণিঝড়। এমতাবস্থায় একটি ছোট্ট দ্বীপে কেমন কাটছে চঞ্চলের?

উত্তরে অভিনেতার জবাব, আপতত ভয়ে কাটছে।

শুটিং প্রসঙ্গে চঞ্চল আরও বলেন, এই ছবির শুটিংয়ে ছেঁড়াদ্বীপ থেকে আরো অনেক গভীরে আমাদের চলে যেতে হয়। যেখান থেকে কোনো মাটি দেখা যায় না। সমুদ্রের তীরের মানুষের গল্প নয় এটা, একদম সমুদ্রের গভীরে চলে যাওয়া জেলেদের গল্প ‘হাওয়া’। আমাদের গল্পের দৃশ্যায়ন যাতে নিখুঁত হয়, এজন্যই বেশ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি।

চঞ্চল ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছিলেন শুক্রবার। বাংলাদেশ টাইমস প্রতিনিধির কাছে সেদিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে এই অভিনেতা বলেন, আমরা গত পরশু (শুক্রবার) যখন শুটিং শেষ করে ফিরছি তখন সমুদ্র স্বাভাবিক নেই। যে ট্রলার সমুদ্রের গভীরে আমাদের নিয়ে যায়, সেটা এসে ঘাট থেকে দূরে নোঙ্গর করতে পারছিল না। বড় ট্রলার থেকে নেমে আমাদের ছোট ট্রলারে উঠে ঘাটে যেতে হবে। কিন্তু ঢেউ এতো বেশি যে আমরা কোনোভাবে ছোট ট্রলারে উঠতেই পারছিলাম না। মানে ঢেউ এসে আমাদের ওপরে উঠিয়ে দিচ্ছিল। ৭-৮ ফিট ওপরে উঠে যাচ্ছিল, যার কারণে কোনোভাবেই লেবেলিং হচ্ছিল না।

ফাইল

অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে চঞ্চল আরও বলেন, সে এক কঠিন অভিজ্ঞতা আমরা ফাইনালি ঘাটে উঠে আসতে পেরেছিলাম। কিন্তু এমন ঢেউয়ের কবলে আগে কখনো পড়িনি। আর শনিবারতো আমরা হোটেলের বাইরেই যেতে পারিনি। কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীর সদস্যরা আমাদের খোঁজ খবর রাখছিলেন। হোটেলের জানালা পর্যন্ত খুলতে পারিনি। বন্দী সময় কেটেছে। তবে আজ (রোববার) একটু বেটার ওয়েদার। কিন্তু সাগরে ঢেউ রয়েছে যথেষ্ট। সমুদ্র এখনো উত্তাল। স্বাভাবিক হলেই শুটিং শুরু করবো।

‘হাওয়া’ ছবিটির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন জানান, এরকম প্রতিকূল অবস্থায় সেন্টমার্টিনে থেকে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুব রিস্ক। কিন্তু এখান থেকে এই মুহূর্তে বেরিয়ে যাওয়ারও ব্যবস্থা নেই। জাহাজ, ট্রলারসহ সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ। এখানকার প্রশাসনদের সঙ্গেও আলাপ হয়েছে। দেখি আজ রাতটা, এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। অবস্থা একটু ভালো’র দিকে গেলে শুটিং শেষ করে তবেই ঢাকায় ফিরবো।

‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রে মূল তারকাদের মধ্যে আছে চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও নাজিফা তুষিসহ আরো অনেকে। তারা সকলেই এখন সেন্টমার্টিন দ্বীপের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। মূলত সমুদ্র পাড়ের মানুষ প্রধান উপজীব্য হলেও সমুদ্রের গল্পে এটি লিখেছেন নির্মাতা নিজেই। ‘হাওয়া’ প্রযোজনা করছে সান মিউজিক এন্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেড।

 

টাইমস/জেকে/এইচইউ

Share this news on: