একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সুরকার, গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক ও মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। মঙ্গলবার তার অসংখ্য ভক্ত অনুরাগীকে কাঁদিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। কিন্তু রেখে গেছেন তার অমর সব অসাধারণ গান।
তিনি ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। ১৯৭০ দশকের শেষ লগ্ন থেকে তিনি আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সঙ্গীত শিল্পে সক্রিয় ছিলেন।
কিংবদন্তি এই সংগীত ব্যক্তিত্বকে বাংলার মানুষ মনে রাখবে হাজারো গানের মাধ্যমে। ১৯৭৮ সালে মেঘ ‘বিজলি বাদল’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন বুলবুল। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।
তিনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, রাষ্ট্রপতির পুরস্কার, ১১ বার বাচসাস পুরস্কার সহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করে দুবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। প্রথমটি ছিল ২০০১ সালে ‘প্রেমের তাজমহল’ আর দ্বিতীয়টি ছিল ‘হাজার বছর ধরে’ ছবির জন্য। তিনি ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
তার সুরে ও সঙ্গীতে বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের পাশাপাশি এ প্রজন্মের অনেকে গান গেয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপা, মনির খান, জেমস, বাপ্পা মজুমদার, নোলক, রাজীব, কোনাল, সালমা, বিউটি, সাব্বির, কিশোরসহ বাংলাদেশী প্রায় সকল জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী।
অসংখ্য গানে সুর করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। যার অধিকাংশ গানই তার নিজের লেখা। তার সুর কার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে-
‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’।
‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’।
‘সেই রেললাইনের ধারে’।
‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’।
‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’।
‘একতারা লাগে না আমার দোতারাও লাগে না’।
‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’।
‘আমার বুকের মধ্যিখানে’।
‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’।
‘আমি তোমারি প্রেমও ভিখারি’।
‘ও আমার মন কান্দে’।
‘আমার একদিকে পৃথিবী একদিকে ভালোবাসা’।
‘আমি তোমার দুটি চোখে দুটি তারা হয়ে থাকব’।
‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে’।
‘পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমারই ছোঁয়াতে যেন পেয়েছি’।
‘তোমায় দেখলে মনে হয়, হাজার বছর আগেও বুঝি ছিল পরিচয়’।
‘ওই চাঁদ মুখে যেন লাগে না গ্রহণ’।
‘বাজারে যাচাই করে দেখিনি তো দাম’।
‘আম্মাজান আম্মাজান’।
‘এই বুকে বইছে যমুনা’।
‘সাগরের মতোই গভীর, আকাশের মতোই অসীম’।
‘প্রেম কখনো মধুর, কখনো সে বেদনা বিধুর’।
‘আমার সুখেরও কলসি ভাইঙ্গা গেছে লাগবে না আর জোড়া’।
‘পড়ে না চোখের পলক’।
‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’।
‘কী আমার পরিচয়, ঠিকানা কী জানি না’।
‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’।
‘জীবনে বসন্ত এসেছে, ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন’।
‘আমার হৃদয় একটা আয়না’।
‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা, হৃদয়ে সুখের দোলা’।
‘তুমি আমার এমনই একজন, যারে এক জনমে ভালোবেসে ভরবে না’।
‘একাত্তরের মা জননী কোথায় তোমার মুক্তিসেনার দল’।
‘এই জগৎ সংসারে তুমি এমনই একজন’।
‘জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালোবাসা ফুরাবে না জীবনে’।
‘অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন’।
‘নদী চায় চলতে, তারা যায় জ্বলতে’।
‘ও ডাক্তার, ও ডাক্তার।
‘চিঠি লিখেছে বউ আমার’।
‘আট আনার জীবন’।
টাইমস/টিআর/এইচইউ