দাঁত দেখে মানসিক স্বাস্থ্য নির্ণয়

দাঁত প্রত্নতত্ত্ববিদদের প্রাচীন সভ্যতাগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়। দাঁতের গঠন ও বৈশিষ্ট্য দেখে বিজ্ঞানীরা বলতে পারেন যে, প্রাচীন সভ্যতাগুলোর খাদ্যাভাস, জীবনযাপন ও মৃত্যুর কারণ কী ছিল।

কিন্তু নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মুখমণ্ডলের অস্থি কিংবা দাঁত আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও বিস্তারিত বলে দিতে পারে।

বিশেষ করে, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, দাঁত হতাশা, উদ্বেগ, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্য জটিলতা সম্পর্কে পূর্বাভাস দেয়।

ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইরিন ডান ছয় বছর বা তার বেশি বয়সী ৩৭ জন শিশুর পড়ে যাওয়া দুধ দাঁত পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, যাদের দাঁতের এনামেল পাতলা কিংবা সরু ছিল তাদের মনোযোগের ঘাটতি সমস্যা রয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে এ ফলাফল যৌক্তিক মনে হলেও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে এটি একটি অভূতপূর্ব ফলাফল, যা মানুষের মধ্যে বিদ্যমান সাধারণ মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা নির্ণয়ে এক নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।

ডা. ইরিন ডেইলি মেইলকে বলেন, এটা একটা নতুন কিছু যা আমরা এর আগে কখনো দেখিনি বা চিন্তাও করিনি।

সম্প্রতি ডা. ইরিনের নেতৃত্বে প্রত্নতত্ত্ববিদ, নৃবিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত গবেষণাদল ওয়াশিংটনে অবস্থিত আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সাইন্স এর কাছে এই গবেষণাটি উপস্থাপন করেছে।

গবেষকরা ক্যালিফোর্নিয়ার ৩৭ জন শিশুর বাবা-মাকে তাদের শিশুর পড়ে যাওয়া দাঁতগুলো গবেষণাকর্মের জন্য দান করে দিতে বলেছিলেন।

অতঃপর তারা উচ্চ রেজুলেশনের ইমেজিং দ্বারা বিশ্লেষণ করে সেই ফলাফলকে ওই শিশুদের আচরণগত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তুলনা করে বিশ্লেষণ করেছেন। তারা শিশুদের দাঁতের মধ্যে এমন কিছু গঠন ও বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন, যা তাদের ভবিষ্যৎ মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা দেবে।

বর্তমানে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকরা তাদের পরিবেশ, প্রতিবেশী কিংবা পারিবারিক গঠন ও সম্পর্ক ইত্যাদি উপাদানের দিকে গুরুত্ব দেন। সেই তুলনায় দাঁতের গঠন দেখে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া আরও সহজ হবে বলে গবেষকরা মনে করছেন।

গবেষণার এই ফলাফল বিজ্ঞানীদের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে আন্তঃগবেষণা করার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরেছে বলে মনে করেন গবেষক ডা. ইরিন।

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: