কেন প্রতিদিন চা খাবেন?

দিনের শুরুতে এক কাপ চা না পেলে কেমন যেন হাঁপিয়ে ওঠে শরীরটা। তাই না? বিশেষজ্ঞদের মতে, মনে উৎফুল্লতা আনতে এক কাপ চায়ের কোনো জুড়ি হয় না। এই পানীয়টি নানাভাবে শরীরের গঠনে কাজে লাগে, যে সম্পর্কে জানলে আপনি হয়ত অবাক হবেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, চা আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। চা পান করলে আমাদের দাঁত ও হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে, এমনকি এটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধেও বেশ কার্যকরী।

তবে, আপনি ঠিক কোন ধরণের চা পান করছেন তার উপরে এসব উপকারিতা অনেকটাই নির্ভর করবে। ভেষজ নয় এমন প্রায় সব চা-পাতাই সংগ্রহীত হয় ক্যামেলিয়া সাইনেসিস নামক উদ্ভিদ হতে। কতদিন পর পাতা তোলা হচ্ছে, কীভাবে তা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করবে এটি সবুজ, কালো নাকি লাল চা হবে।

সবুজ চা বা গ্রিন-টি সব থেকে কম প্রক্রিয়া জাত, তাই এতে পলিফেনলের পরিমাণও থাকে খুব বেশি। শুধু গ্রিন-টি’তেই ক্যাটেচিন নামক পলিফেনল পাওয়া যায়।

এছাড়া লাল চায়ে থিয়োফিলাইন নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা শরীরে ক্লান্তি দূর করার পাশপাশি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়। এই পানীয়র আরও কিছু উপকারিতা আছে।

চলুন জেনে নিই চা পানের সেসব উপকারিতা-

চায়ে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে
এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের বর্জ্য পদার্থের প্রবেশ প্রতিহত করে, আর তাই এটি আমাদেরকে দূষণগত ক্ষতি হতে রক্ষা করে। ব্ল্যাক, হোয়াইট বা গ্রিন সব চায়েই প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট মজুদ থাকে।

চা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
চা আমাদের রোগ প্রতিরোধকারী সেলগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে, যাতে করে তারা তাদের লক্ষ্যে দ্রুত পৌঁছে যায়। অতি প্রাচীনকাল হতেই মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে তুলসী চা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধকারী ও বিভিন্ন রোগের উপশমকারী হিসেবে আদা-চা বেশ জনপ্রিয়।

দাঁত রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
দাঁতের ক্ষয় রোধেও আমাদের অতি পরিচিত এই পানীয়টি ভূমিকা পালন করে। জাপানিজ গবেষকেরা গবেষণা করে দেখেছেন যে- চা পান করায় দাঁত পড়া কমায়। এটি আমাদের মুখের পিএইচ কমায়, ফলে ক্যাভিটির হাত থেকে দাঁত রক্ষা পায়। এছাড়া অন্য সব পানীয় যেমন দাঁতের ক্যারামে ক্ষয় করে, চা তেমন টা করে না।

চা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, চা পান করলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। এ বিষয়ে ম্যাঙ্গি উইমেনস হেলথ হসপিটালের ক্লিনিকাল নিউট্রিশন ম্যানেজার আনা আর্দিন বলেন, “চা পানের উপকারিতার অনেক প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।”

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে জানা যায়, নিয়মিত চা পানের ফলের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ২০% হ্রাস পায় আর স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায় ৩৫%। কারণ চা আমাদের দেহের এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্র কমিয়ে দেয়। গ্রিন টি এক্ষেত্রে খুবই কার্যকর।

চায়ে ক্যাফেইন কম থাকে
ভেষজ চায়ে ক্যাফেইন থাকে না বললেই চলে। অন্যদিকে সাধারণ চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ থাকে কফির তুলনায় ৫০ ভাগ কম। ফলে কফির বদলে চা পান করলে ক্যাফেইনের দ্বারা আপনার নার্ভাস সিস্টেম আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়।

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: