যেসব খাবার আমিষের চাহিদা পূরণ করবে

আমিষ আমাদের দেহের অঙ্গসমূহ, মাংস পেশী, চামড়া, হরমোন এবং প্রয়োজনীয় প্রায় সব কিছু গঠনেই সাহায্য করে। আর এ কারণেই প্রতি বেলার খাবারে উচ্চ মাত্রায় আমিষ-যুক্ত খাবার থাকা খুব প্রয়োজন।

আমিষ বিভিন্ন উপায়ে আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে, যেমন এটি ওজন কমাতে এবং পেটের চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে শরীরের পেশী ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

তাছাড়া উচ্চমাত্রার আমিষযুক্ত খাবার রক্তচাপ কমাতে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন একজন পূর্ণ বয়স্ক নারীর দেহের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য ৪৬ গ্রাম ও একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষের জন্য ৫৬ গ্রাম আমিষ প্রয়োজন।

চলুন জেনে নিই আমিষযুক্ত কয়েকটি খাবার সম্পর্কে-

ডিম
বলা হয়ে থাকে ডিম হলো পৃথিবীর সব থেকে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি। এটি ভিটামিন, মিনারেল, স্বাস্থ্যকর চর্বি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসহ নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

একটি সম্পূর্ণ ডিম আমিষে পরিপূর্ণ, আর ডিমের সাদা অংশ প্রায় পুরোটাই আমিষ।

আমিষের পরিমাণ: একটি বড় ডিমে ৬ গ্রাম আমিষ ও ৭৬ ক্যালোরি থাকে।

আলমন্ড
আলমন্ড বেশ জনপ্রিয় একটি বাদাম। এটি ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-ই, ফাইবারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

আমিষের পরিমাণ: প্রতি এক আউন্স (২৮ গ্রাম) আলমন্ডে ৬ গ্রাম আমিষ এবং ১৬১ ক্যালোরি পাওয়া যায়।

মুরগির সিনার মাংস
মুরগির সিনার অংশের মাংস একটি জনপ্রিয় আমিষের উৎস। চামড়া ছাড়িয়ে এই মাংস খাওয়া হলে অধিকাংশ ক্যালোরিই আমিষ থেকে পাওয়া যায়। এটি রান্না করা খুব সোজা এবং ভালো করে রান্না হলে খেতেও খুব সুস্বাদু হয়।

আমিষের পরিমাণ: একটি চামড়া ছাড়ানো রোস্ট করা মুরগির সিনায় ৫৩ গ্রাম আমিষ আর মাত্র ২৮৪ ক্যালোরি থাকে।

ওটস
পৃথিবীর সেরা স্বাস্থ্যকর শস্যের তালিকায় উপর দিকেই থাকবে ওটস। এটি স্বাস্থ্যের জন্যে ইতিবাচক ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, থিয়ামিন (ভিটামিন-বি ১) এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

আমিষের পরিমাণ: ১৫% ক্যালোরি আমিষ থেকে আসে। অর্ধেক কাপ ওটসে ২৩ গ্রাম আমিষ এবং ৩০৩ ক্যালোরি থাকে।

দুধ
দুধ খুবই পুষ্টিকর খাদ্য, কিন্তু সমস্যা হলো পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক লোক দুধ সহ্য করতে পারেন না।

যাইহোক, আপনি যদি দুধ সহ্য করতে পারেন এবং পান করতে পছন্দ করেন তাহলে এটি আপনার জন্য গুণগত মানসম্মত আমিষের আদর্শ উৎস হতে পারে। কারণ মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পুষ্টিগুণই দুধে বিদ্যমান।

আমিষের পরিমাণ: ২১% ক্যালোরি আমিষ থেকে আসে। ১ কাপ দুধে ৮ গ্রাম আমিষ ও ১৪৯ ক্যালোরি বিদ্যমান।

ব্রুকলি
ব্রুকলি খুবই স্বাস্থ্যকর একটি সবজি। এটি ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, ফাইবার ও পটাসিয়াম সমৃদ্ধ। একই সঙ্গে এটি একটি উচ্চমাত্রার আমিষ সমৃদ্ধ খাবার।

আমিষের পরিমাণ: ২০% ক্যালোরি আমিষ থেকে আসে। ৯৬ গ্রাম ব্রুকলিতে প্রায় ৩ গ্রাম আমিষ ও মাত্র ৩১ ক্যালোরি থাকে।

চর্বিহীন গো-মাংস
চর্বিহীন গরুর মাংস আমিষে ভরপুর এবং এটি খেতেও বেশ সুস্বাদু। এছাড়াও এটি আইরন, ভিটামিন-বি ১২ এবং প্রচুর পরিমাণে অন্যান্য পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ।

আমিষের পরিমাণ: ৫৩% ক্যালোরি। ১০% চর্বিসহ প্রতি ৮৫ গ্রাম গরুর মাংসে ২২ গ্রাম আমিষ এবং ১৮৪ ক্যালোরি থাকে।

মাছ
আমাদের দেহের জন্য মাছ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি খাদ্য। এতে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ রয়েছে, বিশেষত এতে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড হৃদপিণ্ডের সুস্থতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।

আমিষের পরিমাণ: ৮৫ গ্রাম মাছে ১৯ গ্রাম আমিষ এবং ১৭৫ ক্যালোরি থাকে।

বাদাম
বাদাম খেতে খুবই সুস্বাদু। এতে উচ্চমাত্রায় আমিষ, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি রয়েছে এবং এগুলো আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
আমিষের পরিমাণ: ১৬% ক্যালোরি। ২৮ গ্রাম বাদামে ৭ গ্রাম আমিষ ও ১৫৯ ক্যালোরি থাকে।

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: