লাদাখ সীমান্তে ভারত-চীনের সেনা সংঘর্ষের পর উত্তেজনা যুদ্ধে পরিণত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। ওই সংঘর্ষে ভারতের ২৩ সেনা নিহত হলেও চীন এখনো এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি। এদিকে চীনের হাতে মার খেয়ে দেশে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরিস্থিতি অনুকূলে রাখতে তিনি সেনাপ্রধানসহ হাইপ্রোফাইল চার মন্ত্রীর সঙ্গে গভীর রাতে বৈঠকও করেছেন।
মোদীর ওই রুদ্ধশ্বাস বৈঠকের পরে গুঞ্জন উঠেছে, ভারত হয়তো চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতিই নিচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো এধরণের খবর প্রকাশিত হলেও বাস্তবতা দেখতে হলে অপেক্ষা করতেই হবে।
এদিকে বুধবার নিয়ন্ত্রণরেখায় চীনের আগ্রাসন মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে ভারত। শান্তি বজায় রাখার সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা করা হলেও সীমান্তে ভারতের এলাকায় চীনের কোনো রকম প্রবেশ ও অগ্রাসন মেনে নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ভারত। তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র।
এর আগে লাদাখ সীমান্তে গত সোমবার দুই দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষে উর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাসহ ২৩ জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪ ভারতীয় সেনার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এনডিটিভির খবর।
এদিকে সংঘর্ষ ও প্রাণহানী পরবর্তি পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ করতে মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারাভানের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের সেনাবাহিনী সূত্রের খবরে এনডিটিভি জানিয়েছে, লাদাখে সংঘর্ষে উস্কানি দিয়েছে চীনা সেনারা। তারা ভারতের ভূখন্ডে প্রবেশ করে ভারতীয় সেনাদের ওপর আক্রমণ করে। পরে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ হয়।
তবে ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের উস্কানিতে পা দেয়া ভারতের জন্য ক্ষতিকর হবে। চীন চাইছে ভারত তাদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ুক। কিন্তু ভারতকে মনে রাখতে হবে, চীনের ফাঁদে পা দেয়ার সময় এখনো হয়নি।
এদিকে চীনা সেনাদের হামলায় ভারতীয় ২৩ সেনা জওয়ান নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত জুড়ে মোদি সরকারের সমালোচনা এখন তুঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভারতীয় জাতিয়তাবাদীরা সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। তারা চীনা হামলার সমূচিত জবাব দেয়ার জন্য সরকারকে বারবার ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় অধিকাংশ ভারতীয় এখন পর্যন্ত নাখোশ।
অন্যদিকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীনকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সেই সঙ্গে সংঘাতের পথ পরিহারের আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
টাইমস/এসএন