মহাযুদ্ধের বার্তা, চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনা তুঙ্গে। আগ্রাসী চীনের সামনে ভারত যেন নাবালক শিশু। তাই ভারত শেষমেষ যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই নালিশ নিয়ে হাজির। যুক্তরাষ্ট্রও ভারতের ডাকে সাড়া দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সম্প্রতি জানিয়েছেন, চীনের আগ্রাসন রুখতে ভারতীয় অঞ্চলে মার্কিন সেনা পাঠানো হবে।

পম্পেও’র এমন ঘোষণার পরপরই এবার দক্ষিণ চীন সাগরে দুইটি বিমানবাহী জাহাজ ও বেশ কয়েকটি যুদ্ধ জাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে কোনো ভাবেই খাটো করে দেখছেন না নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

অধিকাংশ বিশ্লেষক মনে করছেন, বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করার ফলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলো সংঘাতে জড়ালে বিশ্বের সকল দেশ হুমকির মধ্যে পড়ে যাবে। এটা মহাযুদ্ধের ইঙ্গিত কিনা তা এখনই পরিষ্কার না।

মার্কিন নৌবাহিনীকে উদ্ধৃত করে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে জাহাজগুলোকে ওই এলাকায় পাঠানো হবে। প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ এলাকায় চীনের সামরিক মহড়া নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এই ঘোষণা দিলো মার্কিন নৌবাহিনী। যদিও মার্কিনীদের দাবি, নৌবহর পাঠানোর পেছনে তাদের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।

জানা গেছে, দক্ষিণ চীন সাগরের প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ এলাকায় গত ১ জুলাই শুরু হওয়া চীনের সামরিক মহড়া আগামী ৫ জুলাই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এরইমধ্যে এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে।

চীন সাগরে দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের মধ্যে সামরিক মহড়া পরিচালনার পরিকল্পনা করে আসছে মার্কিন নৌবাহিনী। তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে তারা জানিয়েছে, শিগগিরই ওই মহড়া শুরু হতে যাচ্ছে। ফিলিপাইন সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরে ইউএসএ নিমিৎজ ও ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ যৌথভাবে মহড়া চালাবে।

সেভেনথ ফ্লিটের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জোয়ে জেইলি বলেন, ফিলিপাইন সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরে দুইটি ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের মহড়ার মধ্য দিয়ে আমাদের বাহিনীগুলো অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ লাভের সুযোগ পেয়েছে। কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিংবা বিশ্বের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ জাহাজগুলো পাঠানো হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, মৎস্য সম্পদসহ খনিজ আহরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগর। এ সাগর দিয়ে বছরে প্রায় ৫ লাখ কোটি ডলারের পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে। পুরো এই সমুদ্রপথকে নিজেদের অঞ্চল বলে দাবি করে আসছে চীন।

তবে আরও কয়েকটি দেশও ওই অঞ্চলের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে। দেশগুলো হচ্ছে মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনাম। আর আনুষ্ঠানিকভাবে ওই অঞ্চলের দাবি না করলেও আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথ হিসেবে ওই অঞ্চলে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি ধরে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on: