আর্কটিক অঞ্চলে হাজার হাজার মরণ ভাইরাস

পৃথিবীর সর্ব উত্তরে অবস্থিত আর্কটিক অঞ্চলের বরফ গলার কারণে বিশ্বে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এসব অঞ্চলের নিচে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে হাজার হাজার বছরের পুরনো ভাইরাস। সেগুলো সক্রিয় হয়ে বিশ্বে ভয়ংকর সব রোগের সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

তারা বলছেন, করোনা মহামারীতে বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত, তখন তুন্দ্রা অঞ্চলের (উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের সীমানা অঞ্চল) এসব ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। এতে সৃষ্টি হতে পারে নতুন এক মহামারী। রোববার দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, আর্কটিক অঞ্চলে যা ঘটছে তা হতাশাজনক। গত ১৫ দিনে সাইবেরিয়ায় সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে তাপদাহ বয়ে যায়। এরই মধ্যে অনেক স্থানে দাবদাহে পুড়ছে। আবহাওয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড। এতে জলবায়ু পরিস্থিতিকে নাটকীয়ভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় চলে আসছে।

জলবায়ুবিষয়ক বিজ্ঞানীরা বিবেচনা করছেন, এটাই হতে পারে আর্কটিক অঞ্চলের জন্য অতিমাত্রায় তাপদাহের ভয়াবহ এক যুগের সূত্রপাত। এমনিতেই করোনাভাইরাস মহামারী সংক্রমণ বিশ্বকে ওলট পালট করে তুলেছে। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এ ধারা। পৃথিবী অতিমাত্রায় গরম হয়ে উঠছে। এতে আর্কটিক অঞ্চলে হিমায়িত অবস্থায় থাকা ভাইরাসগুলো সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, এসব ভাইরাস হাজার হাজার এমনকি লাখো বছরের পুরনো। ভাইরাসগুলো আর্কটিক অঞ্চলের বরফের নিচে হিমায়িত হয়ে সুপ্ত অবস্থায় ছিল। কিন্তু আর্কটিক অঞ্চল পৃথিবীর অন্য অংশের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। দ্রুত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে প্রথমবারের মতো এসব ভাইরাস সক্রিয় হচ্ছে। ফলে ওইসব ভাইরাস বা প্যাথোজেন অবমুক্ত হয়ে পড়ছে, যা আধুনিক মানবসভ্যতা এর আগে কখনও মুখোমুখি হয়নি।

পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম আনআর্থডকে এইক্স মার্সেইলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. চ্যান্টাল অ্যাবারজেল বলেন, প্রাচীনকালের হিমায়িত নমুনা থেকে আমরা ৩০ হাজার বছরের পুরানো ভাইরাসকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হয়েছি। তবে এর আগের ভাইরাসকে আমরা পুনরুজ্জীবিত করতে পারিনি। এখন পর্যন্ত গবেষকরা প্রাচীনকালের ডিএনএ ভাইরাস সক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছেন।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: