নিস্তব্ধ ক্রাইস্টচার্চে জুমার নামাজে হাজারো মুসল্লি

আজ শুক্রবার। পবিত্র জুমার দিন। নিউজিল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিওতে বেজেছে আজানের সুমধুর ধ্বনি। দুই মিনিট নীরব ছিল পুরো নিউজিল্যান্ড। চারদিকে শান্ত, নীরব, নিস্তব্ধ এক পরিবেশ।

অথচ গত এক সপ্তাহ আগে একই দিনে একই সময়ে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদের চলছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। অস্ট্রেলিয়ার শ্বেতাঙ্গ এক সন্ত্রাসীর গুলিতে ঝাঁজরা হয় ৫০ জন মুসল্লি।

ওই দিন হামলার শিকার ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদ। সেখানেই ৪১ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন আততায়ীর গুলিতে। আর বাকি ৯ প্রাণ হারান লিনউড মসজিদে।

আল নূর মসজিদের ইমাম জামাল ফাউদা দেখলেন, বুলেট জর্জরিত আল নূর মসজিদের বাইরে হ্যাগলি পার্কে জড়ো হয়েছে হাজারো মানুষ, তাদের মধ্যে আছেন স্বয়ং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। দেখলেন, সবার বিষাদ ভরা চোখে ভালোবাসা, সহমর্মিতা।

গত ১৫ মার্চ ওই হামলার ঘটনার পর থেকে প্রতিদিনই সব ধর্মের নানা বয়সী মানুষ ফুল হাতে ওই মসজিদের বাইরে আসছিল সংহতি জানাতে। মাওরি আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী রণনৃত্য হাকা পরিবেশন করে শ্রদ্ধা আর সংহতি জানাচ্ছিল শিক্ষার্থীরা।

নিউজিল্যান্ডের অন্য ধর্মের অনেক নারী মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানাতে হিজাব পড়ে সমাবেশে যোগ দেন।

শুক্রবার জুমার নামাজের আগে মসজিদের ভেতরে বাইরে সমবেত নিউজিল্যান্ডবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইমাম জামাল ফাউদা বললেন, ‘ধন্যবাদ তোমাদের হাকার জন্য, ধন্যবাদ ফুলের জন্য।… নিউজিল্যান্ডকে ভেঙে ফেলা যাবে না। আমাদের হৃদয় ভেঙেছে, কিন্তু আমরা ভেঙে পড়ব না।’

আর নামাজে আসা মুসলমানদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘তোমাদের সঙ্গে আজ পুরো নিউজিল্যান্ড কাঁদছে। আমরা সবাই আজ এক।’

নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের খবরে বলা হয়, জুমার নামাজের সময় হ্যাগলি পার্কের এই সমাবেশে জড়ো হয়েছিল প্রায় দশ হাজার মানুষ। মুসলমান রীতিতে কালো কাপড়ে মাথা ঢেকে প্রধানমন্ত্রী আরডার্ন সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় আধা ঘণ্টা।

শ্রদ্ধা জানানোর এই আনুষ্ঠানিকতায় অকল্যান্ডের চারটি মসজিদ শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত সব ধর্মের মানুষের জন্য খোলা থাকবে। সন্ধ্যায় অকল্যান্ডের সবচেয়ে পুরনো পার্ক অকল্যান্ড ডোমেইনে হবে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: