রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল গঠন সম্ভব নয়: মিয়ানমার

রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ‘সেইফ জোন’ বা নিরাপদ অঞ্চল গঠন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর কার্যালয়ের মন্ত্রী কোয়ে তিন্ত সোয়ে।

শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের পঞ্চম দিনের বিতর্কে কোয়ে তিন্ত সোয়ে এ কথা বলেন।

তিন্ত সোয়ে বলেন, এখন মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরিকে অগ্রাধিকার দেবে।

রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত এসব বাস্তুচ্যুতদের ‘পৃথক আইনি মর্যাদা’ আছে। তালিকাভুক্ত এসব প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে যারা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য তাদের ‘নাগরিকত্ব কার্ড’ দেয়া। বাকিদের দেয়া হবে ‘ন্যাশনাল ভেরিকেশন কার্ড’ (এনভিসি), যাকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের জন্য দেয়া ‘গ্রিন কার্ড’ এর সঙ্গে তুলনা করেন স্টেট কাউন্সিলর কার্যালয়ের এই মন্ত্রী।

সোয়ে দাবি করেন, বর্তমান মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে, যখন চরমপন্থী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরএসএ) সশস্ত্র হামলা চালায়। তার আগে রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে সরকার সচেষ্ট ছিল।

বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা এসেছেন ২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনে নতুন করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হওয়ার পর। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান হিসেবে বর্ণনা করে আসছে।

সম্প্রতি যাচাই-বাছাই করে মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের জন্য ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার তালিকা চূড়ান্ত করলেও দেশটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হওয়ায় দুদফা চেষ্টার পরও তাদের কাউকে ভিটেমাটিতে ফেরত পাঠানো যায়নি।

রোহিঙ্গা সঙ্কট বড় আকার ধারণ করার পর ২০১৭ সালে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে এ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন, যার মধ্যে রাখাইন রাজ্যে আলাদা ‘বেসামরিক পর্যবেক্ষক সেইফ জোন’ প্রতিষ্ঠাসহ কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলোর সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের কথা ছিল।

তবে এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের স্ব-ভূমে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যে চারটি প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে সেইফ জোনের কথা নেই। তবে সেখানে ‘রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার ও সুরক্ষার নিশ্চয়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বেসামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েনের’ কথা বলা হয়েছে।

 

টাইমস/এএইচ/এসআই

Share this news on: