ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে দিতে বললেন বিহারের মন্ত্রী

ভারতের বিহার রাজ্যের পানিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সঞ্জয় কুমার বলেছেন, ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে দেয়া হোক। নইলে বন্যার পানিনিষ্কাশনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

বন্যা পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করায় মঙ্গলবার এ দাবি করেন তিনি। ফারাক্কা বাঁধ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে একটি প্রকল্প।

প্রবল বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বিহার, উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা। উত্তর প্রদেশ ও বিহারে বন্যা পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। উত্তর প্রদেশে এই বন্যায় ইতিমধ্যে ১১১ জন ও বিহারে ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা।

এ অবস্থায় বিহার সরকারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খুলে দেয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কা বাঁধের সব স্লুইসগেট। ফলে প্রবল বেগে ফারাক্কার পানি গিয়ে পড়ছে বাংলাদেশে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় দেখা দিয়েছে প্রবল বন্যা।

বিহার ও উত্তর প্রদেশের পানি ঢুকে পড়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেও। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের ফুলহার, মহানন্দা ও কালিন্দী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। প্লাবিত হয়েছে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। বন্যার পানির তোড়ে বর্ধমানে ভেসে গেছে একটি ফেরি। মুর্শিদাবাদে ভেসে গেছে একটি ভেসেল। বন্যায় পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ফারাক্কায় গঙ্গার পানি বিপৎসীমার ৭ ফুট ওপর দিয়ে বইছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাঁধের ১০৯টি স্লুইসগেট খুলে দিয়েছে তারা। স্লুইসগেট খুলে দেয়ায় এই পানি ছুটে যাচ্ছে বাংলাদেশের দিকে।

বন্যার কারণে পাটনায় পানিবন্দী হয়ে পড়েন বিহার রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদি। পরে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা টিমের সদস্যরা (এনডিআরএফ) তার বাসভবন থেকে পুরো পরিবারকে উদ্ধার করেন।

১৯৬১ সালে ফারাক্কা বাঁধ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। ১৯৭৫ সালে এই বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয়। কিন্তু এই বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশে শুষ্ক মৌসুমে পানির সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ফারাক্কা বাঁধবিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: