বাবা চা বিক্রেতা। তাই অভাবের সংসারে টেনেটুনে পড়াশোনা করতে হয়েছে তাকে। স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করেছেন তিনি। তবে বিপত্তি বাঁধে বিমান বাহিনীর পরীক্ষায়। পরপর পাঁচবার ফেল করলেও দমে যাননি। ষষ্ঠবারের চেষ্টায় তিনি পাইলট হয়েছেন। সফলতার এ গল্পটি আঁচল গাঙ্গওয়ালের।
জানা গেছে, ভারতের মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে আরও প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে নিমুচের বাসস্ট্যান্ডে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান চালিয়েই দিন গুজরান করেন আঁচলের বাবা সুরেশ গাঙ্গওয়াল। অভাবের সংসারে থেকেও আঁচল গাঙ্গওয়াল দেখিয়েছেন, ইচ্ছা থাকলে চা-বিক্রেতার মেয়েও পারে বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমানের পাইলট হতে। মেয়ের ওই স্বপ্নের উড়ানের সঙ্গী হতে পেরে তাই এখন মুখে চওড়া হাসি আর বুকে বল সুরেশ গাঙ্গওয়ালের। কিন্তু কবে থেকে এমন অসাধ্য সাধন করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তার মেয়ে?
গর্বিত বাবা সুরেশ গাঙ্গওয়াল জানান, ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথে প্রকৃতির তাণ্ডব চলাকালীন যেভাবে বিমানবাহিনীর কর্মীরা অসম্ভব সাহসকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় মানুষদের সাহায্য করেছিলেন তা দেখেই রীতিমতো বিমান বাহিনীর প্রতি তীব্র ভালোবাসা তৈরি হয় মেয়ের। তখন থেকেই একজন ফ্লাইং অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে আঁচল, আর এখন সেই স্বপ্নই সত্যি হয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান যে, তার স্বপ্নকে সত্যি করতে আঁচল বইপত্র জোগাড় করে পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে। একবার-দু‘বার নয়, পরপর পাঁচবার বিমান বাহিনীর পরীক্ষায় অসফল হলেও আশা ছাড়েননি আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখা তার মেয়ে। শেষপর্যন্ত ষষ্ঠবারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন আঁচল।
তিনি বলেন, আমি গত ২৫ বছর ধরে একটি চায়ের দোকান চালাচ্ছি। সুতরাং, বুঝতেই পারছেন যে আমার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেমন? অনেক সময় তো আমার মেয়ের স্কুল বা কলেজের ফি দেওয়ার জন্যেও টাকা থাকতো না আমার কাছে। সেই সময় আমি অনেকবার অন্যদের কাছ থেকে ধার নিয়েছি এবং ওর ফি দিয়েছি। এই পরিস্থিতিতে যে শেষপর্যন্ত মেয়ে আঁচল গাঙ্গওয়াল ফ্লাইং অফিসার হতে পেরেছে তাতেই আমি গর্বিত।
[সূত্র: এনডিটিভি নিউজ]
টাইমস/জেকে