৩৮তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারপ্রাপ্ত শাবি ছাত্রের ভাইভার অভিজ্ঞতা

১৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে আমার সিরিয়াল ছিল ১১। দ্বিতীয়বারের মতো বিসিএস ভাইভা আমার। আনুমানিক ১২ঃ০৫ আমার সিরিয়াল।

May I come in Sir বলে প্রবেশ করলাম।
খানিকটা ভিতরে প্রবেশ করে নমস্কার দিলাম, স্যার বসার অনুমতি দিলেন। শুরু হল এক অনন্ত যাত্রা, ভাইভার অভিজ্ঞতা আমার সবসময়ই বীভৎস হয়, এবারও ব্যাতিক্রম নয়।

চেয়ারম্যান স্যার : আমার ডকুমেন্টস হাতে নিয়ে বললেন, ১ম চয়েজ পুলিশ। পুলিশের বহুল ব্যাবহৃত একটি অস্ত্র AK-47। বলেন AK দিয়ে কি বোঝায়।

আমি : সরি স্যার। যাত্রা শুরু হল সরি দিয়ে।

স্যার : আচ্চা আপনিতো Public Administration এর স্টুডেন্ট বলেনতো, administration and management এর পার্থক্য কি?

আমি : যথাসাধ্য উত্তর দিলাম, স্যার সন্তুষ্ট হননি।

স্যার : হাতে একটি ঐতিহাসিক ছবি আমায় দেখিয়ে বললেন, এটার একটা ক্যাপসন দেন।

আমি : উত্তর দিলাম, স্যার সন্তুষ্ট হলেন না। এক্সটারনাল-১ স্যার বললেন আরো বিস্তারিত বলেন। আমি বলা শুরু করবো তখন চেয়ারম্যান স্যার বললেন আর বলতে হবে না। আপনারা প্রশ্ন করেন। মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল।

এক্সটারনাল -১ স্যার : আপনার হোম ডিস্ট্রিক্ট সুনামগঞ্জ, বলেন সুনামগঞ্জের কিছু ঐতিহাসিক স্থানের নাম।

আমি : answered.

এক্সটার্নাল -১ স্যার : প্রশাসনের ছাত্র, পুলিশ দিলেন ১ম চয়েজ, এডমিন কেন নয়?

আমি : যথাসাধ্য উত্তর দিলাম।

এবার এক্সটার্নাল -১ স্যার এক্সটার্নাল -২ স্যারকে ইঙ্গিত করলেন।

আমি প্রহর গুনছিলাম কখন শেষ হবে৷

এক্সটার্নাল-২ স্যার : আচ্ছা বাবা ইদানীং পথে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে সরকারের একটি বিশেষ অর্জনের ব্যানার দেখা যায় বলোতো সে অর্জনটা কি।

আমি : উত্তর দিলাম, স্যার বললেন না বাবা এটা না।
সরি বললাম।

এক্সটার্নাল -২ স্যার : বলোতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ কোন পুরস্কার পেয়েছেন, কেন পেয়েছেন?

উত্তর দিলাম, যথারীতি এবারেও ভুল।

এক্সটার্নাল -২ স্যার : তোমার জন্য আমার সর্বশেষ প্রশ্ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মেয়ের নাম কি আর তিনি কোন ক্ষেত্রে দেশকে সামগ্রিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।

উত্তর দিলাম, এবার মনে হচ্ছে কিছুটা সন্তুষ্ট।

এক্সটারনাল -২ স্যার তখন চেয়ারম্যান স্যারের দিকে ইঙ্গিত করলেন।

চেয়ারম্যান স্যার : বাংলাদেশের কোন সেক্টর খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, কেন?

আমি : উত্তর দিচ্ছিলাম, এমনসময় ঘরির এলার্ম বেজে উঠল। স্যার তখন বললে আপনি আসতে পাড়েন।

আমি : ধন্যবাদ স্যার বললাম এবং নমস্কার দিয়ে চলে এলাম।

ভাইভা বোর্ডে আরও একজন স্যার ছিলেন, উনি কোনো প্রশ্ন করেননি।

এভাবেই আমার ভাইভা শেষ হয়। খুবই শকড ছিলাম। মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আর সকলের আশীর্বাদে আমার স্বপ্নপূরণ হল।
সকলের আশীর্বাদ প্রার্থী।

তারিখ- 21/08/2019
বোর্ড- প্রফেসর ডাঃ শাহ আব্দুল লতিফ স্যার।
সময়- ১০ মিনিট।

লেখক : তপন সরকার রাজ
পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত
৩৮তম বিসিএস
Merit position- 32nd
সাবেক শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

টাইমস/জেকে

Share this news on: