চোখের প্রকৃতি বলবে ব্যক্তিত্ব কেমন

চোখকে বলা হয় মানব আত্মার জানালা। এ জানালা দিকে ভালো করে তাকালেই আপনি একজন মানুষের মন পড়ে ফেলতে পারবেন। নির্ণয় করতে পারবেন তার ব্যক্তিত্ব ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের নানা দিক।

প্রকৃতপক্ষে বিশ্বব্যাপী সব সংস্কৃতিতেই চিকিৎসকরা ব্যক্তির চোখের আকৃতি দেখেই তথ্য সংগ্রহ করেন এবং তাকে বুঝার চেষ্টা করেন। তারা বিশ্বাস করেন চোখে এমন অনেক তথ্য থাকে, যা কখনো অবজ্ঞা করা যাবে না।

ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব জানতে চোখের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যকে বিবেচনা করা হয়। যেমন- চোখের আকার, আকৃতি, রং, স্লান্ট এবং এমন কি দুই চোখের মধ্যে দুরত্ব।

আকৃতি: যাদের চোখ অ্যালমন্ড আকৃতির তাদের অসাধারণ প্রতিভা আছে এবং তারা অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার সামর্থ্য থাকলেও নতুন পরিস্থিতির ব্যাপারে এরা খুবই সতর্ক। যাদের চোখ গোল আকৃতির তারা সৃজনশীল এবং কল্পনাপ্রিয়। এদের মন বাস্তবতা থেকে দূরে এবং দিবাস্বপ্নে বিভোর থাকে। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে এরা বাস্তবতার চেয়ে আবেগ ও অনুভূতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। কিছু লোক এদেরকে অবাস্তবধর্মী মনে করলেও অন্যরা ঠিকই তাদের কছে ভীড় করে।

গভীরে স্থিত বা সম্মুখে প্রলম্বিত: যাদের চোখ গভীরে স্থিত, তারা নিজেকে অন্যদের থেকে আড়াল করে রাখে। তবে মাঝে মধ্যে এরা চরমপন্থী হয়ে ওঠতে পারে। তারা অন্যদের সঙ্গে সহজেই মিশে না, তবে রোমান্টিক হয়। তাই তারা কাউকে জানলে গভীরভাবেই জানে। অন্যদের সঙ্গে ক্রিয়া না করে পর্যবেক্ষন করে। যাদের চোখ সম্মুখে প্রলম্বিত তারা খুবই সংবেদনশীল ও বন্ধুভাবাপন্ন হয়। কিন্তু এরা আবার অতিরিক্ত দুশচিন্তা করে। এরা সহজেই অন্যদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। তবে এদেরকে প্রায়ই হতাশাগ্রস্থ মনে হয়।

আকার: যাদের চোখ আকারে বড়, তারা সাধারণত অতি উৎসাহী, সুগ্রাহী, উদার ও সৃজনশীল। তারা নিজেদের এবং অন্যদের আবেগকে গভীরভাবে অনুভব করে। অতি উৎসাহী হওয়ায় তারা জীবনের ক্ষেত্রে যুক্তির পরিবর্তে নিজের পছন্দকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা খুব সহজেই অন্যদেরকে বিশ্বাস করে ফেলে। বিপরীতে যাদের চোখ ছোট তারা চরম বাস্তববাদী হয়। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তি অনুযায়ী।

দূরত্ব: যাদের চোখের দূরত্ব কম অর্থাৎ কাছাকাছি তারা গতানুগতিক হয়। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি এবং তাদের কাছে মূল্যবোধ ও শিক্ষা-দীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। তারা পরিবর্তনে আগ্রহী নয়। তারা স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে না এবং সুনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থাকতে স্বস্তিবোধ করে।

অন্যদিকে যাদের চোখের দূরত্ব বেশি তারা স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। তারা অতীতকে মনে রাখে কিন্তু আঁকড়ে ধরে থাকে না। তারা ঘরে আবদ্ধ থাকে না। বরং বিশ্বকে ঘুরে দেখতে পছন্দ করে।

ঢাল: যাদের চোখের ঢাল নিম্নমুখী, তারা পরনির্ভরশীল হয়। তারা প্রিয় মানুষের কাছে থাকতে পছন্দ করে এবং এদের উপরই নির্ভর করে। ভীতু প্রকৃতি এবং নৈরাশ্যবাদের কারণে কখনো কখনো অনেকেই তাদের সঙ্গ উপভোগ করে না। এটা নিয়ে তারা মাথাও ঘামায় না। তারা অন্যদের এবং তাদের সম্পর্কগুলোর গভীর যত্ন নেয়।

অন্যদিকে যাদের চোখের ঢাল ঊর্ধ্বমুখী তারা উচ্চাভিলাষী ও চরমপন্থী। তারা মনে মনে যদি কোনো লক্ষ্য স্থির করে, এটা অর্জন না করা পর্যন্ত কেউ তাদের থামাতে পারে না। মানুষ এ ধরণের লোকেরা সঙ্গ পছন্দ করে। কারণ তারা পূর্ণ-বিকশিত এবং রসিক মনের হয়।

এভাবে চোখের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখে একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এজন্য চোখের ভাষা বুঝার সামর্থ্য থাকতে হবে। তাইতো শিল্পী যথার্থই বলেছেন- ‘চোখ যে মনের কথা বলে। চোখের সে ভাষা বুঝতে হলে চোখের মত চোখ থাকা চাই।’

 

টাইমস/এএইচ/জিএস

Share this news on: