খালি পেটে ভুল করেও কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। কারণ, খালি পেটে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেই বড় কোনো ভুল হতে পারে। এমনই দাবি করছেন ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ ডান্ডি’র গবেষকরা। যা ‘সাইকোনোমিক বুলেটিন অ্যান্ড রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।
গবেষকদের মতে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বা বেতন নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করাসহ গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো সিদ্ধান্ত খালি পেটে নিলে সেটার ফলাফল ভালো নাও হতে পারে।
গবেষণা দলের প্রধান বেঞ্জামিন ভিনসেন্ট বলেন, “আমরা সবাই জানি ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাবার কিনতে যাওয়া ঠিক না। এই সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার কেনার সম্ভাবনা থেকেই যায়। আমাদের গবেষণা বলছে, অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়তে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “ধরা যাক আপনি পেনশন বা মর্টগেইজ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছেন, এই সময় ক্ষুধার্ত থাকলে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় আপনি হয়ত দ্রুত তুষ্ট হওয়ার চেষ্টা করবে।”
গবেষণার জন্য অংশগ্রহণকারীদের পর্যবেক্ষণ করতে ভিনসেন্ট যে নকশা করেন, তার মধ্যে খাদ্য, অর্থ এবং অন্যান্য চাওয়া-পাওয়া বিষয়ক প্রশ্ন ছিল। যেগুলো পেট তৃপ্ত থাকা অবস্থায় এবং এক বেলা খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়।
ভিনসেন্ট বলেন, “আমরা দেখতে পেয়েছি বেশি ও কম সময় ক্ষুধার্ত থাকার সঙ্গে মানুষের চাহিদার নাটকীয় পরিবর্তন হয়।”
তিনি বলেন, “এটি মানুষের চরিত্রের একটি রূপ, যা বিপণন পেশায় জড়িতরা কাজে লাগিয়ে সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। তাই মানুষের জানা উচিত ক্ষুধার্ত অবস্থায় চাহিদার পরিবর্তন হয়।”
খালি পেটে গুরুত্বপূর্ণ ভুল হতে পারে এমনটা নিশ্চিত হয়েছেন সুইডেনের একদল গবেষকও। তাদের মতে, এর পিছনে রয়েছে ঘ্রেলিন নামক একটি হরমোন। এই হরমোনটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আবেগের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সুইডেনের গোটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্লগ্রেনস্কা অ্যাকাডেমির গবেষকরা বলছেন- খালি পেটে থাকলে অথবা খাওয়ার আগে শরীরে ঘ্রেলিন নিঃসরণের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। যার সরাসরি প্রভাবে মস্তিষ্ক আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে এবং যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
টাইমস/জিএস