কেন প্রতিদিন সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করবেন?

সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা এখন আমাদের প্রতিদিনের শহুরে জীবনের অংশ। তবে একইসঙ্গে এটি একটি কার্যকর ব্যায়াম, যা আপনাকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা থেকে মুক্ত রাখবে এবং সুস্থ ও সবল থাকতে সাহায্য করবে।

যদিও নিয়মিত জিমে গিয়ে ব্যায়াম করা এবং খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে ওজন কমানো ও সুস্বাস্থ্য রক্ষার বেশ কিছু অতিরিক্ত সুবিধা আছে। তবুও আমাদের প্রতিদিনের করা এমন অনেক কাজ রয়েছে, যা আমাদের ওজন কমাতে ও আকর্ষণীয় আকৃতি বজায় রাখতে খুবই সহায়ক।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত ৮ তলা ওঠা-নামা করলে প্রতিদিন আপনার প্রচুর ক্যালোরি ব্যবহৃত হবে এবং আপনি অধিক উদ্যমী আর কর্মক্ষম অনুভব করবেন। যদি আপনার যোগা ক্লাসে বা জিম সেশনে যাওয়ার সময় না থাকে, তাহলে শুধু সিঁড়ি বেয়েই আপনি দেহে জাদুকরী পরিবর্তন অনুভব করতে পারেন।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণায় সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামার অনেক ইতিবাচক দিক উঠে এসেছে-

  • প্রতিদিন মাত্র ৮ তলা ওঠা-নামা করলে অকাল মৃত্যুঝুঁকি ৩৩ শতাংশ কমে যায়।
  • প্রতিদিন মাত্র ৭ মিনিট সিঁড়ি ভাঙার অভ্যাস দশ বছরে আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি পঞ্চাশ ভাগ হ্রাস করে।
  • নিয়মিত মাত্র দুই মিনিটের সিঁড়ি ভাঙার অভ্যাস মধ্য বয়সে ওজন বৃদ্ধি থেকে মুক্তি দেয়।

আপনি খুব সহজেই সিঁড়ি ভাঙা আপনার প্রাত্যহিক জীবনে অভ্যাস করে নিতে পারবেন এবং এটি একটি কার্যকর শরীরচর্চা হতে পারে।

চলুন সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করার আরও কিছু উপকারিতা জেনে নিই-

বাড়তি ওজন কমাতে সহায়তা করবে
লিফটের বদলে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করলে খুব দ্রুতই আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরিয়ে ফেলতে সক্ষম হবেন। কারণ সিঁড়ি ভাঙলে প্রচুর ক্যালোরি খরচ হয়, যা আপনাকে দেহের নিচের অংশে মেদহীন সুস্থ পেশী গড়তে সাহায্য করবে।

সিঁড়ি ভাঙতে আপনার এক টাকাও খরচা করতে হবে না, সুতরাং জিম সেশন বা যোগা ক্লাস করার তুলনায় এটি খুব অনেক সাশ্রয়ী।

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়
নিয়মিতভাবে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করলে দেহে এক ধরনের সুখানুভূতি দানকারী হরমোনের নিঃসরণ ঘটে, যা মানসিক চাপ ও উদ্বেগ দূর করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়
সিঁড়ি ভাঙার ফলে প্রতিদিনের এই দৈহিক শ্রম আপনার দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল হ্রাস করে। ফলে আপনি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো ভয়ানক রোগ সমূহ থেকে মুক্ত থাকবেন।

অস্টিওআর্থারাইটিস বা বাতের ঝুঁকি কমে
নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙলে বাতের সম্ভাবনা কমে। বিশেষত নারী কিংবা যাদের সারাদিন বসে কাটাতে হয় ও যারা ডেস্ক জব করে তাদের বাত হবার আশঙ্কা বেশ। কিন্তু নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙলে পেশী নমনীয়তা লাভ করে এবং ফলে পেশীর ব্যথা ও খিঁচুনি হবার সম্ভাবনা কমে যায়।

ইনসোমনিয়া বা ঘুম না আসার রোগ ভালো হয়
ইনসোমনিয়ার বিরুদ্ধে এটি বেশ কার্যকর। প্রতিদিনের পরিশ্রমের ফলে আপনার পেশীগুলি নমনীয় হবে, সহনশক্তি বৃদ্ধি পাবে, দেহে ইতিবাচক হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পাবে এবং ঘুমের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

হৃদপিণ্ড ভালো থাকে
সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামাকে কার্ডিওভাসকুলার অ্যাক্সারসাইজ বা হৃদযন্ত্রের ব্যায়ামও বলা হয়। এর সব থেকে উপকারী দিক হলো নিয়মিত এই অভ্যাস আপনাকে বিভিন্ন হৃদরোগ থেকে মুক্ত রাখবে এবং হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। কারণ, এতে করে হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস আরও সহনশীল হয়ে ওঠে, রক্তচাপ স্বাভাবিক হয় এবং রক্তের এলডিএল কোলেস্টেরল বা বাজে কোলেস্টেরল কমে যায়। সূত্র: এনডিটিভিডটকম

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: