রূপপুরের ‘বালিশকান্ডে’ ১৬ কর্মকর্তা বরখাস্ত

পাবনার রূপপূর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ক্রয়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এর সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুদুল আলমসহ গণপূর্ত অধিদপ্তরের ১৬ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দাখিল করা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সাময়িক বরখাস্তকৃত অন্য কর্মকর্তারা হলেন- মো. শফিকুল ইসলাম, মো. আবু সাঈদ, মো. শাহিন উদ্দিন, মো. জাহিদুল কবীর, মো. রফিকুজ্জামান, সুমন কুমার নন্দী, মো. ফজলে হক, মো. রওশন আলী, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. রুবেল হোসাইন, মো. তারেক, আহম্মেদ সাজ্জাদ খান, মো. মোস্তফা কামাল, মো. তাহাজ্জুদ হোসেন, একেএম জিল্লুর রহমান।

মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোসা. সুরাইয়া বেগম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্বাভাবিক ব্যয় করার বিষয় তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের ১৬ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এছাড়া যাচাই-বাছাই ও বিল প্রদানের সাথে জড়িত ১৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে অবসর সুবিধা ভোগকারী গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শফিকুর রহমান রয়েছেন।

বিচারপতি তারিক উল হাকিমের বিচারপতি ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে এ প্রতিবেদনটি পেশ করা হবে। আগামী ২০ অক্টোবর এই মামলার ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

গত ২১ জুলাই বালিশকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা দেখতে চান হাইকোর্ট। সরকারকে ২০ অক্টোবরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

এর আগে বালিশকাণ্ডের ঘটনায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। হাজার পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র কেনায় মালামালের প্রকৃত মূল্য অপেক্ষা ৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি দেখানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪টি ভবনে আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম সরবরাহ কাজের চুক্তি মূল্য একশ ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। অথচ মালামাল সরবরাহ করা হয়েছে ৭৭ কোটি ২২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ চুক্তি মূল্য সরবরাহ করা মালামালের প্রকৃত মৃল্যের চেয়ে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার টাকা বেশি। এই বাড়তি পরিশোধিত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

গত ১৯ মে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রীনসিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ, আসবাবপত্র অস্বাভাবিক মূল্যে কেনা ও তা ভবনে তোলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি করেন। রিট শুনানির এক পর্যায়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং একই সঙ্গে এই ঘটনায় গঠিত গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।

 

টাইমস/এমএস 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য জানালেন সাকিব Apr 25, 2024
img
গাজায় ২০ জনকে জীবন্ত কবর দেয়ার অভিযোগ Apr 25, 2024
img
দীর্ঘ তাপপ্রবাহে রেকর্ড, কতদিন থাকবে জানাল অধিদপ্তর Apr 25, 2024
img
শিক্ষক নিয়োগ: পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে হাতে পৌঁছে যেত উত্তরপত্র Apr 25, 2024
img
বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকে তাকালে আমরা লজ্জা পাই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী Apr 25, 2024
img
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস Apr 25, 2024
img
এক দিনের ব্যবধানে আরও কমলো স্বর্ণের দাম Apr 25, 2024
img
চুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ Apr 25, 2024
img
যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া বিএনপি: কাদের Apr 25, 2024
img
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত শনিবার: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী Apr 25, 2024