রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শিশু গৃহকর্মী জান্নাতী (১২) হত্যার ঘটনায় গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলীম জানান, মামলার অপর আসামি রোকসানা পারভিনের স্বামী পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহমেদ পলাতক আছেন।
মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের ৬/৫/এ নম্বর ভবনের একতলায় সাঈদ আহমেদের স্ত্রী রোকসানা পারভিন, সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে ও বোন থাকত। কাজের প্রয়োজনে সাঈদ পিরোজপুর থাকত। তবে ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি জি বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে ফোনে জানানো হয়, এক দম্পতি একটি মেয়েকে মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে নিয়ে এসেছেন। পরে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল করে ও ময়নাতদন্ত করতে বলে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে তেজগাঁও বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রোকসানা বলেন মারধরের পর জান্নাতী অজ্ঞান হয়ে রান্নাঘরে পড়ে যায়। ওই অবস্থাতেই দুই ঘণ্টার মতো ঘরে পড়েছিল। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানায় আগেই সে মারা গেছে।
রোকসানা পারভিন স্বীকারোক্তিতে তার স্বামীর সম্পৃক্ততা সম্পর্কে তথ্য দেননি। আরও অনেক কিছুই চেপে গেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ সূত্র জানায়, জান্নাতীর শরীরের নতুন-পুরোনো অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে। তারা ধারণা করছেন মৃত্যুর আগে জান্নাতী ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।
জান্নাতীর বাবা জানু মোল্লা বলেন, তার বাড়ি বগুড়ার গাবতলী। মঙ্গলবার ভোরে ফোনে তাকে জানানো হয় তার মেয়ে অসুস্থ। দেখতে চাইলে যেন তাড়াতাড়ি ঢাকায় আসেন। খবর পেয়ে ঢাকায় এসে দেখেন মেয়ে মারা গেছে। তখন মেয়ের গায়ে তিনি অনেক দাগ দেখেছেন বলে জানান তিনি।
চাকরি সূত্রে সাঈদ যখন বগুড়ায় ছিলেন তখন আট বছর বয়সে জান্নাতী ওই বাড়িতে কাজ নেয়। এরপর সাঈদের পরিবার ঢাকায় চলে এলে জান্নাতীও তাদের সঙ্গে ঢাকায় আসে।
টাইমস/এএইচ/এসআই