প্রতি বছরের মতো এবারও দীপাবলি উৎসবকে ঘিরে বরিশাল নগরীর মহাশ্মশানে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উৎসবের রাতে প্রায় ১ লাখ সমাধিতে একসঙ্গে জ্বালানো হবে মোম।
উপমহাদেশের বৃহৎ দীপাবলি উৎসব ঘিরে ২শ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবকে কেন্দ্র করে নগরীতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নিহত প্রিয়জনদের শ্রদ্ধা জানাতে সমাধিগগুলোর সামনে সাজিয়ে দেয়া হবে নানা ফুল, ফলসহ নানা উপাচার। চলতি বছর তিথি অনুযায়ী, ভূত চতুর্দশীর অর্থাৎ দীপাবলি উৎসব শনিবার। পরের দিন রোববার কালীপূজা। বরিশাল মহাশ্মশানে ওই দিন কালীপূজাও হবে মহাসমারোহে।
প্রতিবছর ভূত চতুর্দশী পুণ্য তিথিতে এ উৎসব হয়ে থাকে। দীপালি উৎসব ও মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী জানান, এ বছরই সর্বপ্রথম উৎসবকে ঘিরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের উদ্যোগে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, পুরো অনুষ্ঠানকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বিঘ্নে এ উৎসব পালনের জন্য সিটি কর্পোরেশন, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বরিশালের লাকুটিয়া খাল ঘিরে ৪ একর জমির ওপর রয়েছে এই মহাশ্মশান। এখানেই রয়েছে রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যানন্দ দাশ ও পিতামহ সর্বানন্দ দাশের সমাধি।
মহাশ্মশান কমিটির নেতারা জানান, নতুন-পুরনো মিলিয়ে এখন ওই মহাশ্মশানে সমাধি এক লাখের কাছাকাছি। এর মধ্যে হাজার খানেক সমাধির মঠ এখন বেওয়ারিশ। এদের বংশধররা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। পুরনো বেওয়ারিশ মঠগুলোকে সংস্কার করে যে কটির সন্ধান মিলেছে, তাতে খোদাই করে পরিচয় লেখা হয়েছে।
মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখোপাধ্যায়ের কথায়, পুরাকীর্তি আর দৃষ্টিনন্দন এই পবিত্র স্থানটি শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, সব সম্প্রদায়ের লোকজনই এখন সেখানে যায়। এই মহশ্মশানে রয়েছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, নেত্রী মনোরমা মাসিমা, শিক্ষাবিদ কালীচন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমাধি।
টাইমস/এসআই