কুমিল্লার দেবিদ্বারে বাস ও ট্রাকের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ছয়জন।
রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেবিদ্বার উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে ইউসুফ ও নগরীর অশোকতলা এলাকার মকবুল হোসেনের সাত বছরের কন্যা শিশু রবজা। তবে নিহত অপর এক নারীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আহতরা হলেন- নিহত শিশু রবজার মা হালিমা বেগম (৪৫), কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার দৌলতপুর এলাকার আবুল কাশেম (৫০), জসিম উদ্দিন (৪৮), সজিব (২০), সদর দক্ষিণ উপজেলার ধনপুর এলাকার দুলাল মিয়া (৪৫) ও বলরামপুর এলাকার মজনু মিয়া (৫০)। তাদের সবার ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ময়নামতি হাইওয়ে থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, রোববার ভোরে যাত্রী নিয়ে চান্দিনা থেকে মাইক্রোবাসটি ময়নামতি আসছিল। পথিমধ্যে মহাসড়কের দেবিদ্বার উপজেলার গোবিন্দপুর স্টেশনে মাইক্রোবাসটি যাত্রী ওঠানোর জন্য থামে। এ সময় পেছন থেকে একটি বাস ধাক্কা দিলে মাইক্রোবাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে অপর একটি ট্রাক মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিলে গাড়িটি মহাসড়কের ওপরে উল্টে যায় এবং গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মাইক্রোবাসটিতে আগুন লেগে যায়। এ সময় আগুনে গাড়ির ভেতরই তিনজনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে চান্দিনা ফায়ার সার্ভিস। তাদের উদ্ধার করে চারজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও একজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি দেখে পাঁচজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আলমগীর হোসেন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি উদ্ধার করে ডাম্পিংয়ে নেয়া হয়েছে। ট্রাক ও বাস চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।
চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সফিক উদ্দিন মুন্সি বলেন, আমরা এসে তিনজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই এবং শিশুসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করি। এর আগে আরও দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেলোয়ার হোসেন জানান, হালিমা, আবুল কাশেম ও জসিম উদ্দিন নামের ৩ জনকে এ হাসপাতালে আনার পর তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে আহত হালিমার ৫০ শতাংশ, আবুল কাশেমের ৩৫ শতাংশ এবং জসিম উদ্দিনের ২৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান, সজিব ও মজনু নামের দুইজনকে হাসপাতালে আনার পর তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দেবিদ্বার থানার ওসি জহিরুল আনোয়ার বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ দেখছে। আমাদের থানায় শুধু মামলা হবে।
টাইমস/এইচইউ