শেষ দু’দিন বাবার সমর্থনে মাঠে সরব ছিলেন মাসুদ পুত্র কন্যা

 

স্থাপত্যে পড়ালেখা করা তাসনিয়া মাসুদের কাছে ভোট চাওয়ার মত বিষয় একেবারে নতুন। তার ভাই আলবাব মাসুদেরও একই ঘটনা। বাবার সমর্থনে মানুষের কাছে যাওয়ার পর বিরল অভিজ্ঞতা হচ্ছে ভাইবোন দুজনের। তাসনিয়া ও আলবাব লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মেয়ে। তাদের বাবা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ আসন (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) থেকে মহাজোটের প্রার্থী।

চারদিন আগে ২৪  ডিসেম্বর দাগনভূঞার এক বিশাল সমাবেশে যখন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মাসুদ চৌধুরী সমর্থনে ভোট চান তখন বিপুল মানুষের আগ্রহ দেখা গেছে।

 

মাসুদ চৌধুরী ভোটের আগেও এলাকার বিষয়ে মনোযোগী ছিলেন। এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে এলাকার মানুষের আগ্রহ আরও বেড়েছে তাকে নিয়ে। ফেনী-৩ আসনে অতীতে চারবার বিএনপি জিতেছিল। সে রেকর্ড ভেঙ্গে এবার মহাজোটকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগ।

এমন অবস্থায় বাবার নির্বাচনি মাঠে এসে যোগ দিয়েছিলেন তাসনিয়া মাসুদ ও আলবাব মাসুদ। প্রচার শেষ হওয়ার আগের দুদিন তারা এলাকার নানা পথে প্রান্তরে ঘুরেছেন।

প্রার্থী হিসেবে বাবাকে যে এলাকার মানুষের এত পছন্দ তা তাদেরকে অভিভূত করেছে।

সারাবাংলাকে আলবাব মাসুদ বলেন, এলাকার মানুষের উন্নয়নে তার বাবার  নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। এমপি হয়ে এসব বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেন তার বাবা।  এমপি মাসুদ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ও দক্ষ জনসম্পদে রুপান্তর করার  প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আলবাব মাসুদ ২৭ ডিসেম্বর বাবার সঙ্গে পথসভায় থেকে প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন।

তাসনিয়া বলেন, ‘আমরা যখন বাবার পরিচয় দিতে যাচ্ছি তখনই মানুষ আপন করে নিচ্ছে। এলাকায় ছোট বেলা থেকেই যাতায়াত ছিল। সেই সুবাদে মানুষদের সঙ্গে নানা আয়োজনে দেখা সাক্ষাত হয়েছে। এখন ভোটের মাঠে এসব মানুষকে কাছে পাওয়া যাচ্ছে।  

এছাড়া মানুষ বাবার সমর্থনে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন- বললেন তাসনিয়া।

২৫ ডিসেম্বর থেকে তারা বাবার সঙ্গে এলাকায়। প্রচারের শেষ দুদিন আলবাব বাবার সঙ্গে আর তাসনিয়া বের হয়েছিলেন মায়ের সঙ্গে।

আলবাব বলেন, বাবা আগে থেকেই এলাকর ব্যাপারে বেশ মনোযোগী এবং যত্নশীল। তিনি মানুষদের যে প্রতিশ্রুতি বড় করে দিচ্ছেন সেটি হলো -আগামী ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে পুরোপুরি গ্যাস লাইন।

আর আলবাব নিজেও আগ্রহী স্থানীয় মানুষদের জীবন মান উন্নয়ন ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিকে রুপান্তর করতে।

আলবাব অস্ট্রেলিয়ায়  অর্থনীতি ও আইন নিয়ে পড়ালেখা করেছেন। ওখানেই থাকেন এখন। আর স্থাপত্য নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যানবেরা থেকে পাশ করেছেন তাসনিয়া। এখন বাবার সঙ্গে ঢাকায় ব্যবসায় নিজেকে জড়িয়েছেন। তার পাশাপাশি মার্কেটিং নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করছেন ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

দুদিন থেকে নির্বাচনি মাঠে তাদের পরিচয় মাসদু পুত্র কন্যা। তারা বাবার সমর্থনে ভোটের মাঠে।

মাসুদ চৌধুরী ওয়ান ইলেভেনের সময় অন্যতম আলোচিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা ছিলেন ।

সেসময় দেশের দুর্নীতি-অনিয়ম দূর করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘গুরুতর অপরাধ দমন-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি’র প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন তিনি। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে ৭ বছর দায়িত্ব পালন করেন।

জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নমূলক নানা পরিকল্পনা রয়েছে তার। কর্ম জীবনের মতো রাজনৈতিক জীবনেও স্বাধীনতার চেতনা ও আদর্শ অক্ষুণ্ন রাখতে চান সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।

তিনি যে আসন থেকে প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন এ আসন ১৯৯১ এর জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে বিএনপির দুর্গে পরিনত ছিল।  পর পর ৪বার এ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী জয়লাভ করেছে। সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে এ আসনটি জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ছেড়ে দেয় আওয়ামীলীগ। কিন্তু নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে প্রায় ৫৮ হাজার ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী রহিম উল্যাহ।

স্থানীয় ভোটারদের মতে, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর ব্যাক্তিগত ক্লিন ইমেজ এবং ১/১১ এর সময় এলাকায় বাকা নদী সোজা করণ প্রকল্প, মডেল থানার ভবন নির্মান, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনসহ উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উন্নয়নে সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকায় তার জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

টাইমস/এসএ

Share this news on: