ফরিদপুর মেডিকেলে ‘পর্দাকাণ্ডে’ ছয় জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। দুদকের ফরিদপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (দন্ত বিভাগ) গণপতি বিশ্বাস শুভ, হাসপাতালের সাবেক জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) মিনাক্ষী চাকমা, হাসপাতালের সাবেক প্যাথোলজিস্ট এএইচএম নুরুল ইসলাম, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সি ফররুখ আহমেদ ও জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন।

উপ-পরিচালক আবুল কালাম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য ‘অপ্রয়োজনীয়’ এবং ‘অবৈধভাবে উচ্চমূল্যে’ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের মাধ্যমে সরকারের দশ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করার অভিযোগ করা হয়েছে।

তিনি জানান, হাসপাতালের আইসিইউর পর্দা ও আসবাবপত্র কেনায় ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মেসার্স অনিক ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বাজারমূল্যের চেয়ে অস্বাভাবিক দাম দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এরপর গত ২০ অগাস্ট উচ্চ আদালত এ অভিযোগ তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেয়। এর জন্য ছয় মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ফরিদপুর মেডিকেলের জন্য অনিক ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে একটি কার্যাদেশের মাধ্যমে ১০টি পণ্য সরবরাহের জন্য ১০ কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। অপ্রয়োজনীয় ওই সব সরঞ্জামের দাম বাজারদরের চেয়ে অনেক বেশি ধরে ১০ কোটি টাকা বিলও জমা দেওয়া হয়। শেষ মুহূর্তে মন্ত্রণালয় বিল অনুমোদন না করায় তা আটকে যায়।

ওই সব সরঞ্জাম সরবরাহের পর যে বিল জমা দেওয়া হয়, এতে আইসিইউতে ব্যবহৃত একটি পর্দার দাম ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধরা হয়। একটি অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্ট কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। একটি ভ্যাকুয়াম প্ল্যান্ট ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, একটি বিএইইস মনিটরিং প্ল্যান্ট ২৩ লাখ ৭৫ হাজার, তিনটি ডিজিটাল ব্লাড প্রেশার মেশিন ৩০ লাখ ৭৫ হাজার, একটি হেড কার্ডিয়াক স্টেথিসকোপের দাম ১ লাখ ১২ হাজার টাকা।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আইএমএফের হিসাবে দেশের রিজার্ভ এখন কত, জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক Mar 28, 2024
img
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত Mar 28, 2024
img
বিশ্বে প্রতিদিন ১০০ কোটি টন খাবার নষ্ট হয় : জাতিসংঘ Mar 28, 2024
img
জাহাজসহ জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে সরকার অনেক দূর এগিয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী Mar 28, 2024
img
ঢাবির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯.৯৩ শতাংশ ফেল Mar 28, 2024
img
একনেকে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন Mar 28, 2024
img
রাজসিক সংবর্ধনায় দায়িত্ব নিলেন বিএসএমএমইউ'র নতুন উপাচার্য Mar 28, 2024
img
রোদে পোড়া ত্বকের যত্নে হলুদের ঘরোয়া প্যাক Mar 28, 2024
img
শহরের চেয়ে গ্রামে বিয়ে-তালাক বেশি Mar 28, 2024
img
ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫ Mar 28, 2024