খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগী ভর্তি করা হয়েছে। ভাইরাসে আক্রান্ত রাশিদা (২০) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরগোবর গ্রামের বাসিন্দা। ১১ জানুয়ারি থেকে তিনি এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর আগে ২০১৬ সালে সর্বশেষ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত মাগুরার দুই জনকে খুমেকে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম কামাল হোসেন বলেন, ১১ জানুয়ারি রাশিদাকে হাসপাতালে আনার পর তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসকরা একমত হন যে, তার শরীরে নিপাহ ভাইরাস রয়েছে। অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে সব রোগী থেকে আলাদা করে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তাকে খুমেক হাসপাতালে মেডিসিন ইউনিট-১ এ ভর্তি রাখা হয়েছে। এই চিকিৎসক এ ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
নিপাহ ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর বাবা মো. বাবুল হোসেন বলেন, বারবার মাত্রাতিরিক্ত জ্বর আসছিল এবং অজ্ঞান হয়ে পরছিল রাশিদা। তাই তাকে ভালো চিকিৎসার জন্য খুলনায় নিয়ে আসি। এখানে আনার পর চিকিৎসকরা জানান, রাশিদার দেহে নিপাহ ভাইরাস রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা গ্রামের মানুষ, কাঁচা রস আনন্দের সঙ্গে খেয়ে থাকি। এ থেকে এ ধরনের সমস্যার কথা আগে শুনিনি।”
রাশিদার স্বামী মো. শরিফুল ইসলাম সরদার জানান, এক মাস আগে খেজুরের রস কেনেন তিনি। এই রস তার পরিবারের ৪/৫ জন কাঁচা খায়। অন্যদের কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু রাশিদা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সাধারণত বাদুড় থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। এ ভাইরাস মানুষের মস্তিষ্কের প্রদাহ বা এনকেফেলাইটিস ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টি করে। সাধারণত সংক্রমণের ৪ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, নিপাহ ভাইরাস নিয়ে খুলনার গ্রাম পর্যায়ে সচেতনতামূলক কাজ চলছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে এ ভাইরাস বিষয়ে সচেতন করছেন।
টাইমস/জিএস