আলোচনায় নতুন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম

সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অর্থ কেলেঙ্কারি ও সদ্য সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বিয়ে করে অনেক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় এই মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন মো. নুরুল ইসলাম সুজন।

জানা গেছে, এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পান মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন। মনোনয়ন পাবার পর থেকেই রাতদিন ছুটে বেড়িয়েছেন প্রচারণার কাজে। এ কাজে সবসময়ই তাঁর সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী নিলুফার ইসলাম।

কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন নিলুফা। পরে তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। নির্বাচনের পরদিন ৩১ ডিসেম্বর পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দান দিঘীতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এদিকে স্ত্রী হারোনো বেদনা দিয়ে বিশাল ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকে জয় লাভ করেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন। জয় লাভের পর শোককে শক্তিতে পরিণত করে বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। ওই শপথের পর শেষ নয়, পেয়েছেন রেল মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বও। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ওই দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার বিকেলে অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে শপথও নিয়েছেন তিনি।

এর আগে ৬৭ বছর বয়সে দীর্ঘ কুমারজীবনের ইতি টেনে ছিলেন সদ্য সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর হনুফা আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। দেড় বছর পর ২০১৬ সালের মে মাসে একটি মেয়ে সন্তানের বাবা হন তারা।

এরও আগে ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল রাতে বিপুল পরিমাণ টাকাসহ পিলখানায় ধরা পড়েন সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার। এ ঘটনার পর মন্ত্রীত্বও হারিয়ে ছিলেন সুরঞ্জিত। পরে তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়।

এদিকে রেলপথে সরকার বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা সত্ত্বেও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না বাংলাদেশ রেলওয়ে। দিন দিন কমছে সেবার মান। তবে বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া।

সূত্রমতে, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর থেকে রেলে অর্থায়ন বাড়তে থাকে। এই সরকারের আমলে ১০ হাজারের বেশি লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও রেলে এখন পর্যন্ত অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, ঋণ নিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রকল্পের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে। এগুলো সুদে-আসলে ফেরত দিতে হবে। যখন ঋণের কিস্তি বেড়ে যাবে, তখন দেখা যাবে রেলের আয়ের চেয়ে ঋণের কিস্তির পরিমাণ বেশি।

গত পাঁচ বছরে রেলের ভাড়া দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এখন রেলের আন্তঃনগর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) শ্রেণির ভাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা পথে চলাচলকারী বিলাসবহুল বাসের প্রায় সমান।

তবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নতুন মন্ত্রী বাংলাদেশ রেলওয়েকে নতুন করে ঢেলে সাজাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন রেল পথের যাত্রীরা।

আব্দুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, তার বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায়। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে ঢাকায় বসবাস করেন। এই সুবাধে তিনি বেশিরভাগ সময় ট্রেনযোগে যাতায়াত করেন।

তবে ট্রেন সেবার মান অনেক নিম্নমানের জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের অনেক সময় নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়াও অনেক ট্রেনের ভেতরে নোংরা পরিবেশের কারণে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। তবে নতুন মন্ত্রী এসব সমস্যা চিহিৃত করে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সামাধান করবেন বলে আশাবাদী তিনি।

এ্যাডভোকেট মো. আব্দে ওয়াহিদ আল ওয়াহিদি বলেন, তিনি একজন সৎ মানুষ। উনার মাধ্যমেই রেল বিভাগে বিপ্লব হবে। তিনি সব সময় সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কাজ করেন। 

 

টাইমস/ কেআরএস/এইচইউ

Share this news on: