দাফনের আগে নড়ে উঠল নবজাতক

জামাল হোসেনের স্ত্রী শিউলী আক্তারের প্রসব ব্যথা উঠলে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকাল ৬টায় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক পুত্রসন্তান জন্ম দেন তিনি। কিন্তু জন্মের পর নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন হাসপাতালের চিকিৎসক। এরপর হাসপাতালের এক আয়া স্বজনদের কাছ থেকে একটি কাঁথা নিয়ে নবজাতককে মুড়িয়ে মেঝেতে ফেলে রাখেন। কিছুক্ষণ পর নবজাতককে একটি কার্টনে ভরে হাসপাতালের বারান্দায় আরও চার ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়। পরে নবজাতককে দাফনের জন্য স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু বাড়িতে যাওয়ার পর দাফনের প্রস্তুতি নেয়ার সময় কার্টন খুলে দেখা যায় পা নাড়াচ্ছে নবজাতক। তাৎক্ষণিক তাকে ভর্তি করা হয় বেসরকারি একটি প্রাইভেট হাসপাতালের শিশুদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউতে)।

চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক)। ওই প্রসূতির বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার চড়ানল গ্রামে।

এ ঘটনার জন্য চিকিৎসক-নার্স ও আয়াসহ সংশ্লিষ্টদের অবহেলাকে দায়ী করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন নবজাতকের স্বজনরা। শনিবার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক।

নবজাতকের বাবা জামাল হোসেন বলেন, শুক্রবার সকাল ৬টায় শিউলীর অপারেশন করা হয়। এতে এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু জন্মের পর নবজাতকের দিকে নজর দেননি কোনো চিকিৎসক-নার্স। উল্টো মৃত ঘোষণা করা হয়। এরপর কার্টনে মুড়িয়ে নবজাতককে হাসপাতালের মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। এভাবে চার ঘণ্টা পড়ে থাকে নবজাতক। পরে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে এনে দাফনের প্রস্তুতি নেয়ার সময় নড়েচড়ে উঠে নবজাতক। পরে সিএনজিযোগে কুমিল্লা মুন হাসপাতালে এনে নবজাতককে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

বর্তমানে নবজাতক মুন হাসপাতালের এনআইসিইউতে রয়েছে। তার মা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনতলায় অপারেশন থিয়েটারের পাশে পোস্ট অপারেটিভ কক্ষের ৫ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।

মুন হাসপাতালের এনআইসিইউর মেডিকেল কর্মকর্তা রাব্বি হোসেন মজুমদার বলেন, শিশুটি এখন শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। সাধারণ শিশুদের থেকে অনেক কম শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে সে। তাই আমরা অক্সিজেন দিয়ে শিশুটিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছি।

এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি যেহেতু আমার নজরে এসেছে তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলব। এক্ষেত্রে কারও গাফিলতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: