‘বাবার সাথে ধান কাটতে গিয়ে শুনি জিপিএ-৫ পেয়েছি’

নীলফামারীর জলঢাকায় দিনমজুরের ছেলে জিপিএ-৫ পেয়েছে। অভাবের সংসারে বাবার সঙ্গে তিনি ধান কাটেন অন্যের জমিতে। রোববারও তিনি অন্যের জমিতে ধান কাটতে গিয়েছিলেন। তার জানা ছিল না আজ রেজাল্ট দেবে। পরে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাকে জানান সে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

জিপি-৫ পাওয়া জগত চন্দ্র রায় বলেন, আমি জানি না আজ রেজাল্ট হয়েছে। বাবার সাথে অন্যের জমিতে দিন মজুরের কাজ করতে গিয়ে দুপুরে হেড স্যারের কাছে জানতে পারলাম আমি এ প্লাস পেয়েছি। আমার তো পড়ালেখা বন্ধ হয়েই গিয়েছিল। তারপর আমাদের হেড স্যার আমার বাবাকে ডেকে স্কুল হতে আমার পড়ালেখার যাবতীয় দায়িত্বের ভার নেন। এরপর আমি আবারো স্কুলমুখী হই। যার ফসল আজকের এসএসসির রেজাল্ট।

নীলফামারীর জলঢাকা আলহাজ্ব মোবারক হোসেন অনির্বাণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে জগত চন্দ্র রায়।

জগত চন্দ্রের মা রতনা রানী বলেন, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। তারপর আমার আর পড়া হয়নি অভাবের কারণে। আমরা গরিব মানুষ। আমার সন্তানের পাশে যদি কেউ না দাঁড়ায় তাহলে এই পড়া তার শেষ পড়া হবে।

প্রধান শিক্ষক শাহ মো. রোকনুজ্জামান রোকন চৌধুরী বলেন, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন এই প্রতিষ্ঠান হতে ১১২ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ৮২ জন পাস করেছে। পাশের হার ৭৫%। প্রতিষ্ঠানটিতে যেসব শিক্ষার্থী আছে তারা অধিকাংশই গরিব ঘরের। আর জগত এমন গরিব ঘরের যে কিনা বাবা-মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকায় পরীক্ষা শেষে দিন মজুরের কাজ করতে গিয়েছিল। আজও তাকে যখন রেজাল্টের কথা অন্যের মোবাইল ফোনে জানাই তখনও সে দিনমজুর হিসেবে মানুষের ধান কাটছে। এমন মেধাবীদের পাশে থাকা সহযোগিতা করা সবার নৈতিক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।

 

টাইমস/জেকে

Share this news on: