অনলাইনে লতিফুর রহমানের মিলাদ মাহফিল

ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে রোববার অনলাইনে তার স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এতে শুরুতে লতিফুর রহমানের স্বজন ও বন্ধুস্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে স্মরণ করেন। এরপর দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সবাই তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

শুরুতে লতিফুর রহমানের বড় মেয়ে সিমিন হোসেন তার বাবার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‍“১৯৭১ সালে আব্বু সব হারিয়েছিলেন। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকেই ট্রান্সকমকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসাগোষ্ঠীতে পরিণত করেছেন। ছোট মেয়ে (শাজনীন তাসনিম রহমান) ও নাতিকে (ফারাজ আইয়াজ হোসেন) হারানোর মতো জীবনের দুটি বিয়োগান্ত ঘটনার পরও তিনি ভেঙে পড়েননি। নিজের মতো করে সব এগিয়ে নিয়েছেন।”

সিমিন হোসেনের বক্তব্যের পর লতিফুর রহমানের বন্ধুস্থানীয় ব্যবসায়ী ও সহকর্মীরা একে একে বক্তব্য দেন।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, আপস বলতে কোনো শব্দ লতিফুর রহমানের অভিধানে ছিল না। তাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু তার নীতি ছিল- ভাঙবেন, তবু মচকাবেন না।

পেপসিকোর এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার সাবেক চেয়ারম্যান সঞ্জীব চাড্ডা বলেন, “আমি জীবনভর যত মানুষের সঙ্গে মিশেছি, তাদের মধ্যে একজন অন্যতম অসাধারণ মানুষ ছিলেন লতিফুর রহমান। দৃঢ় মূল্যবোধ, সততা ও উচ্চমানের সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন পরিবারসচেতন ব্যক্তি ও একজন নেতা।”

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী হংকংয়ে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। বলেন, লতিফুর রহমান শুধু নিজের ব্যবসা নয়, ব্যবসায়ীদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে (এমসিসিআই) লতিফুর রহমান অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। উল্লেখ্য, লতিফুর রহমান সংগঠনটির সাতবার সভাপতি ছিলেন।

ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার–এর সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি লতিফুর রহমানের ছিল অসম্ভব ভালোবাসা। এর কারণ ছিল, তিনি বিশ্বাস করতেন, গণতন্ত্রই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারে, যতই ত্রুটি-বিচ্যুতি থাক না কেন।

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, লতিফুর রহমান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার। তিনি ৫০ বছরে একবারও পাকিস্তান যাননি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এক কোটি এক লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তিনি সব সময় বাংলাদেশের জয় দেখতে চাইতেন।

লতিফুর রহমানের নাতি যারেফ আয়াত হোসেনের পরিচালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমান, লতিফুর রহমানের বন্ধু হাসান আসকারি প্রমুখ।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: