প্রসব ব্যথায় কাতর স্ত্রীকে অজ্ঞান করে সড়কে রেখে পালালো স্বামী!

রূপা আক্তার (২৫)। শেরপুর জেলার আব্দুল মান্নান ফকির নামে একজনকে বিয়ে করে তিনি গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় বসবাস করেন। ট্রাকের হেলপার স্বামী মান্নান ফকির বিয়ের পর থেকে তাকে খুব একটা দেখবাল করেননি। এ অবস্থায় তিনি অন্তঃসত্ত্বা হলে বাচ্চা নষ্ট করারও হুমকি দিতো। তিনি নিজেকে স্বামীর কাছ থেকে আড়ালে রেখেই দিনপার করছিলেন। এর মধ্যে বাচ্চা প্রসবের সময় এলে শরীরে দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। এই অবস্থায় বুধবার রাতে কিছু ওষুধ এনে খেতে দেয় স্বামী মান্নান। এরপর আর কিছু বলতে পারেনি। পরে বৃহস্পতিবার ভোরে জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে একটি অপরিচিত জায়গায় আবিষ্কার করেন।

বৃহস্পতিবার সকালে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কানুরামপুর-ত্রিশাল সড়কের মধুপুর বাজারে একটি মাদরাসার সামনে। রূপার বরাত দিয়ে স্থানীয় মগটুলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ মো. বদরুজ্জামান মামুন এসব তথ্য জানান।

রূপা আক্তারের ধারণা, স্বামী তাকে এখানে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই সড়কের পাশে একটি আলিয়া মাদরাসার সামনে কাতরাচ্ছিলেন ওই নারী। এ ঘটনা দেখে এগিয়ে যায় দুই যুবক মনির ও ইদ্রিস কামাল। তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় মগটুলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ মো. বদরুজ্জামান মামুন। তিনি তাৎক্ষনিক পাশের বাড়ির এক নারীকে ডেকে এনে সড়কে পড়ে থাকা নারীকে সরিয়ে স্যালাইন পুষ করে লোক চক্ষুর আড়ালে রাখেন। খবর দেন ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান মামুন জানান, তিনি এসে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সে করে ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সেখানে দীর্ঘ সময় চেষ্টার ওই নারী মৃত কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা.নুরুল হুদা খান জানান, কর্তব্যরত সেবিকা তাকে জানিয়েছেন ওই নারীর শরীরের ওপর অনেক ধকল গেছে। ভিতরে বাচ্চার অবস্থার উল্টো ছিল। অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সন্তানকে বাঁচানো যেতো।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: