করোনায় মৃত বাবার লাশও নিতে আসেনি প্রতারক শাহেদ!

করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান, প্রতারণা ও ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় প্রভাব বিস্তার করে আলোচনায় আসা রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. শাহেদের বাবা সিরাজুল ইসলাম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে (সাবেক আয়েশা মেমোরিয়াল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তবে সিরাজুল ইসলামের লাশ আনতে হাসপাতালে যায়নি ছেলে শাহেদ কিংবা পরিবারের কেউ।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, সিরাজুল ইসলাম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। ৪ জুলাই মো. শাহেদ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে আসেন। শাহেদের বাবা হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য জটিলতা ছিল।

তিনি বলেন, “সিরাজুল ইসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও করোনা পরীক্ষায় তার পজিটিভ আসে। সেজন্য আমি শাহেদকে বলেছিলাম, যেহেতু আপনার হাসপাতাল কোভিড ডেডিকেটেড, তাই সেখানে (রিজেন্ট হাসপাতাল) নিয়ে যান। তখন তিনি আমাকে তার হাসপাতালে কোনো সার্ভিস না থাকার কথা জানান।”

ডা. আশীষ আরও বলেন, “ হাসপাতালে নিজের বাবাকে ভর্তি করিয়ে প্রথম দুই দিন শাহেদ খোঁজ নিয়েছেন। রিজেন্টে র‌্যাব অভিযান চালানোর দিন রাতেও ফোন করেছিলেন, কিন্তু তারপর থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আমাদের কাছে শাহেদের ফোন নম্বর ছাড়া আর কারও নম্বর ছিল না। তার সব নম্বর বন্ধ পেয়েছি। শাহেদের স্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশনের খবর পাঠক, তার একজন সহকর্মীকে এ খবর দেয়া হলে তাদের আত্মীয় বা কেউ এসেছিলেন। তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।”

তবে তার আগ পর্যন্ত পরিবারের কাউকে খুঁজে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, ৭ জুলাই শাহেদের মালিকানাধীন উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার নমুনা পরীক্ষা না করে রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে অভিযান চালায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়। সব কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই ঘটনায় শাহেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও শাহেদ এখনো পলাতক আছেন।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: