বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী খুন, ছাদের গেইট আটকে যৌন হয়রানি

ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক ছাত্রী তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতা। এইচএসসি পাস করে তিনি মালয়েশিয়ায় এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। লকডাউনের কারণে তিনি দেশে এসেছিলেন। বাড়ির মালিকের ছেলের যৌন লালসার শিকার হয়ে তার প্রাণ গেছে।

বিকেল বেলা বাড়ির ছাদে উঠে মালিকের ছেলের যৌন হয়রানির কবলে পড়েন তিনি। এক পর্যায়ে তাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করা হয়। এমন অভিযোগে মামলা করেছেন মৌমিতার পরিবারের সদস্যরা। সোমবার রাতে কলাবাগান থানায় মামলা করেন মৌমিতার বাবা শামীম। এতে ওই বাড়ির মালিক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের ছেলে ফাইজারসহ আরও কয়েকজনকে সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে।

কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ বলেন, মৌমিতার বাবা এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এই মামলায় ফাইজারসহ আরও কয়েকজনকে সন্দেহবাজন হিসেবে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ির মালিকের ছেলের বন্ধু আমাদের হেফাজতে ছিল। তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

জানা যায়, মৌমিতারা তিন বোন, এর মধ্যে সে মেজ। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করার জন্য মা-বাবাসহ সেখানে চলে যান মৌমিতা। কিন্তু করোনার কারণে গত বছরের ১৮ জুন দেশে আসেন। দেশে এসে ধানমন্ডির ওই বাসাটিতে ওঠেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে আসার পর থেকে ফাইজার বিভিন্ন সময় মৌমিতাকে উত্ত্যক্ত করতেন। ফাইজারের পরিবারকে এ বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও তারা কোনো প্রতিকার করেনি। উল্টো এ বিষয়ে ফাইজারের পরিবার ছেলের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন।

এ বিষয়ে মৌমিতার ফুফু শাহনেওয়াজ খানম বলেন, মৌমিতাকে ছাদে কিংবা সিঁড়িতে একা পেলেই ফাইজার তার বন্ধুদের নিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন। ঘটনার দিন বিকেল ৪টায় মৌমিতা যখন ছাদে ওঠে তখন ফাইজার ও তার বন্ধুরা ছাদের গেট (দরজা) আটকে দেয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এরপরই মৌমিতার লাশ পাওয়া যায়। এছাড়া আশপাশের অনেক ভবনের লোকজন দেখেছিল, ঘটনার দিন বিকেলে ৪-৬টা পর্যন্ত ছাদে অনেক লোকজন ছিল। কিন্তু পুলিশ ফাইজারকে আটক না করে তার বন্ধুকে আটক করেছে। ফাইজারকে আটক করলে সব তথ্য পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় ধানমন্ডির ৮ নম্বর রোডের বাসার ছাদে ওঠেন মৌমিতা। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিল্ডিংয়ের পেছনের গলিতে তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। উদ্ধার করে গ্রিন রোডের গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সবশেষ শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ময়নাতদন্ত শেষে মৌমিতার মরদেহ মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়।

 

টাইমস/জেকে/এসএন

Share this news on: