রাজধানীর পুরান ঢাকায় ওয়াসার পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপায় না পেয়ে অনেকেই পানি কিনে খাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি।
এছাড়া অলিতে-গলিতে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা এবং ড্রেন পরিষ্কার না করার কারণে ময়লা জমে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পুরান ঢাকার হোসেনি দালান রোড, অরফানেজ রোড, কমল দাহ রোড, নাজিমউদ্দিন রোড, গিরদা উর্দু রোড, জয়নাগ রোড, বকশিবাজার রোড, বকশিবাজার লেন, আমালাপাড় সিট রোড, তাঁতখানা লেন, উমেশ দত্ত রোড, নবাব বাগিচা, নুর ফাতা লেন ও পলাশি ফায়ার সার্ভিস এলাকার গলির ভেতরের ড্রেনগুলো অনেক ছোট। প্রতিটি ড্রেন ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় এসব এলাকায় দুর্গন্ধের মাত্রা দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তেজপাতা গলিতে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে ছোট একটি ড্রেন। পাশের বাসা থেকে ময়লা পানি পড়ছে ওই ড্রেনে।
শুধু ড্রেনের সমস্যা নয়,এই এলাকায় খাবার পানিতেও রয়েছে দুর্গন্ধ। এছাড়া অল্পবৃষ্টিতে পুরো এলাকা ডুবে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
নাইমুল ইসলাম নামের এক বাসিন্দা বাংলাদেশ টাইমস’কে জানান, তিন বছর থেকে তেজপাতা গলিতে বাস করছেন। শুরু থেকেই এখানকার ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ পাচ্ছেন। ফলে বাজার থেকেই পানি কিনে খেতে হচ্ছে তাকে।
‘এছাড়া গলির রাস্তায় যত্রতত্র ময়লা ও আবর্জনা ফেলে রাখা, এবং ড্রেনগুলোতে ময়লা জমে ভরাট হওয়ায় এখানকার পরিবেশটাই দুর্গন্ধযুক্ত।’
নাইমুল ইসলাম আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী অনেকবার প্রতিবাদ করেছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কিন্তু প্রতিকার হয়নি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে হোসেনি দালান সমাজকল্যাণ সংস্থা ও পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ টাইমস’কে বলেন, ড্রেনগুলো দেশ স্বাধীনের আগে নির্মিত। অনেকগুলো আবার ব্রিটিশ আমলের। আকারে অনেক ছোট ড্রেনগুলো এখনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে অল্প ময়লাতেই ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত বেশির ভাগ ওয়াসার পানির পাইপলাইন পুরনো। অনেক পাইপে জং ধরে ফুটো হয়ে গেছে। অবৈধ সংযোগের কারণেও অনেক পাইপ ফুটো হয়ে গেছে। ফলে ফুটো স্থান দিয়ে ময়লা ও পোকামাকড় খাবার পানিতে প্রবেশ করছে।
আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ, ড্রেন সংস্কার ও পানি সমস্যার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে অনেকবার লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান হয়নি। কবে সমাধান হবে তাও জানি না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আব্দুল আজিজ বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, ‘আমি বিদেশ সফরে যাচ্ছি। বিদেশ থেকে এসে বিষয়টি নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলব।’
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বাংলাদেশ টাইমস’কে বলেন, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ওয়াসা পানি শোধন করে। শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানির স্তর নীচে নেমে যায়। এজন্য পানি শোধনে কেমিক্যালের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে হয়। তাই পানির স্বাদ ও গন্ধে কিছুটা পরিবর্তন হয় বলে জানান তিনি।
টাইমস/কেআরএস/জেডটি