বিকাশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ: তিন বার ফেসবুক পেজের নাম পরিবর্তন (পর্ব-২)

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘বিকাশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’ নামে পেজ খুলে ডিলারশিপ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে যাচ্ছে।  তবে পেজের 'হিস্ট্রি' অপশনে গিয়ে দেখা গেছে এই নাম দেয়ার আগে তার কমপক্ষে দুই বার পেজের নাম পরিবর্তন করেছে।  

বাস্তবে এই কোম্পানির পণ্যের কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও মহাখালী ডিওএইচএস আবাসিক এলাকায় একটি অস্থায়ী অফিস ভাড়া নিয়ে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।বাংলাদেশ টাইমস এর অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হলো।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘বিকাশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’ এর এমডি পরিচয়দানকারী রবিন এর আগে ‘হামদান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’ পেজ খুলে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি ও ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়েছেন। তবে বিভিন্ন সময় ফেসবুকে পেজ খুলে এবং অফিস ভাড়া করে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও তার কোম্পানির কোনো অস্থিত্বই পাওয়া যায়নি।

২০১৭ সালের ১৫ মার্চ ‘হামদান ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’ নামে ফেসবুকে একটি পেজ খোলা হয়। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের ছবি পোস্ট করে ডিলার নিয়োগ, কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওই পেজটির নাম পরিবর্তন করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।।

এরপর ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ‘সিটি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’ নামে নতুন আরেকটি পেজ খুলে আবার সক্রিয় হয়ে উঠে চক্রটি।

নতুন করে একই পদ্ধতিতে তারা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু করেন।

পেজ খোলার পর তারা বিডিজবসে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী সিটি ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অফিসের খোঁজে বৃহস্পতিবার পল্টনে যান এ প্রতিবেদক। কিন্তু ৮৭, পুরানা পল্টন লেনের ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় গিয়ে তালা ঝুলতে দেখা যায়।

পরে আশপাশের অন্য অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, দুই থেকে তিন মাস আগে এখানে ‘সিটি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’ নামে একটি অফিস ছিল। পরে তারা চলে গেছেন।

ভবনটির সুপারভাইজার মো. ওমর আলী খানও একই কথা জানালেন। বলেন, ‘গত ডিসেম্বর মাসে তারা এখান থেকে চলে গেছে’।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৮ মার্চ আবারও পেজটির নাম পরিবর্তন করেন তারা। এবার নতুন নাম দেওয়া হয় ‘বিকাশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’।

শুধু নাম পরিবর্তন নয়, আগের মতোই তারা অফিসও নিয়েছেন। রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বাড়িতে অফিস নিয়ে সেখান থেকেই বর্তমানে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যবারের মতো এবারও একইভাবে ফেসবুকে প্রচার চালানো হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ছবি পোস্ট করে জনবল ও ডিলার নিয়োগ চলছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। আগের মতোই জনবল নিয়োগে বিডিজবসে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে কোম্পানির কার্যক্রম শুরুর আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন প্রচারণা চালানো হয় বলে দাবি করেন এমডি পরিচয়দানকারী রবিন।

এ ব্যাপারে জানতে ‘বিকাশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লি.’ এর সিইও পরিচয়দানকারী সাব্বির আহমেদ সাইমন বাংলাদেশ টাইমস’কে বলেন, ‘আমরা এই (মার্চ) মাসে ব্যবসা শুরু করেছি। এখনো সব কার্যক্রম শুরু করি নাই।’

 

বিকাশ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ: প্রচার না প্রতারণা? (পর্ব-১)

 

টাইমস/ কেআরএস/জেডটি

Share this news on: