শিশুদের অধিকার রক্ষায় বঙ্গবন্ধু শিশু আইন প্রণয়ন করেন: প্রধানমন্ত্রী  

শিশুদের অধিকার রক্ষায় বঙ্গবন্ধু শিশু আইন প্রণয়ন করেছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের যে অধিকার সেটা যাতে নিশ্চিত হয় তার জন্য ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা এই বাংলাদেশে শিশু আইন প্রণয়ন করেন, তখনো জাতিসংঘ শিশু আইন করেনি। কত দূরদর্শিতা ছিল তার নেতৃত্বে। আমরা তার আলোকেই ২০১১ সালে জাতীয় শিশু নীতি প্রণয়ন করি।

রোববার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত শিশু সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন হওয়া পর মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এরই মধ্যে তিনি শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পুরোপুরি অবৈতনিক করে দিয়ে যান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের অধিকার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, পাশাপাশি শিশু শিক্ষা, খেলাধুলা, শরীরচর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা- সবদিকে যেন তাদের পারদর্শিতা গড়ে ওঠে সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি।

তিনি বলেন, আজকের শিশু যাতে আগামী দিনে একটি সুন্দর জীবন পায়, তা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা পরিবেশ সৃষ্টি করছি যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখতে পারে, মানুষের মত মানুষ হতে পারে, উচ্চ শিক্ষা নিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও কম্পিউটার ল্যাব করে দিচ্ছে। প্রতিটি জেলায় ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব করে দেওয়া হচ্ছে। সারাদেশে ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি যারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাদের জন্য ব্রেইল বইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য তাদের ভাষার বই দেওয়া হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। ৭ই মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সে ভাষণ প্রচার করেছিল। তাদের নির্মম নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া লামিয়া সিকদারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান সেলিমা হোসেন, শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কেএম আলি আজম বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেয় চতুর্থ শ্রেণির আরাফাত হোসেন। জেলা প্রশাসক মোখলেসুর রহমান সরকার গোপালগঞ্জ জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের লোগোর একটি রেপ্লিকা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধুকে লেখা চিঠি’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করার পর সেখান থেকে নির্বাচিত সেরা চিঠিটি পড়ে শোনায় যশোরের কেশবপুরের শিশু সুরাইয়া। অনুষ্ঠানে দুস্থদের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে ‘আমার কথা শোন’ শীর্ষক একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান, শিশু শিল্পীদের ফটোসেশন ও বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির জনকের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: