মেয়ে হত্যার বিচার দাবিতে রাস্তায় বৃদ্ধ বাবা  

মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাতে ছবি নিয়ে এক বৃদ্ধ বাবা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

বুধবার জেলা সদরের প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তিনি।

মেয়ের জামাইয়ের পক্ষ থেকে মামলা ‍তুলে নেয়ার হুমকি পাওয়ার পর অবস্থান কর্মসূচিতে যান ওই বৃদ্ধ।

মেয়ে কামরুন নাহার তুর্ণার হত্যার বিচার ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ষাটোর্ধ্ব ওই ব্যক্তি।

জানা গেছে, ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের আমিরুল হকের ছেলে আরিফুল হক রনির সঙ্গে পারিবারিকভাবে কামরুন নাহার তুর্ণার বিয়ে হয়। তাদের একটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে।

বিয়ের পরই তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কলহ দেখা দেয়। এই কলহের জের ধরে গত ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল তুর্ণাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন রনি। হত্যার সময় তুর্ণা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হত্যার পর তুর্ণার মরদেহ বাড়ির একটি পরিত্যক্ত পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখা হয়।

এ ঘটনায় তুর্ণার স্বামী রনিকে আসামি করে ২৫ এপ্রিল আশুগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তুর্ণার বাবা মফিজুল হক।

পরে ওই বছরের ২১ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক রনিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে জামিনে মুক্ত হন রনি।

ইতোমধ্যে আদালতে হত্যা মামলা অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর থেকেই মামলা তুলে নিয়ে আপস করার জন্য তুর্ণার বাবা মফিজুল হককে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন রনি ও তার পরিবারের লোকজন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মফিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আসামি পক্ষের লোকজন আমাকে বারবার হুমকি দিচ্ছে, আপস না করলে আমাকে মেরে ফেলবে। আমার তো কোনো ওয়ারিশ নেই, তাই আমাকে হত্যা করলে আমার বিচার চাওয়ারও কেউ নাই। সেজন্য আমাকে এলাকার সর্দারদের (মাতবর) দিয়ে চাপ দিচ্ছে মামলা তুলে নিতে।

তিনি বলেন, আমি একা অসহায়ত্ববোধ করছি, আমার কেউ নেই। আমি বিপদে আছি। আমার মেয়ের হত্যার বিচার যেন হয়, আসামির যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, মফিজুল হক তাকে হুমকি দেওয়ার কোনো অভিযোগ থানায় করেছেন কিনা সেটি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ করে থাকলে বিষয়টি তদন্ত করে আদালতকে জানানো হবে।

 

টাইমস/জেডটি

Share this news on: