ক্যান্সারে আক্রান্ত জিহাদুলের বাবাকে এক লাখ টাকা দিল বাংলাদেশ টাইমস

ক্যান্সারে আক্রান্ত তিন বছর সাত মাস বয়সী জিহাদুল ইসলামের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলাদেশ টাইমস।

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর খিলক্ষেতে বাংলাদেশ টাইমসের কার্যালয়ে শরীয়তপুরের স্বর্ণঘোষ গ্রামের বাসিন্দা ও জিহাদুলের বাবা ইয়াকুব বেপারির কাছে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আরিফ হাবিব।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আইটিএআইএল এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনমিং রাও জিমি, বাংলাদেশ টাইমসের বিশেষ প্রতিবেদক তাহজিব হাসান।

চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরিফ হাবিব বলেন, ‘আমরা সমাজের অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চাই। আর এরই ধারাবাহিকতায় ক্যান্সার আক্রান্ত জিহাদুল ইসলামের চিকিৎসা খরচ বাবদ এক লাখ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করছি। আশাকরি সমাজের অন্যান্য বিত্তশালীরা ছোট্ট শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবেন।’

আইটিএআইএল এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনমিং রাও জিমি বলেন, এমন একটি মহৎ অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। 

বাংলাদেশ টাইমসের বিশেষ প্রতিবেদক তাহজিব হাসান বলেন, ‘সম্প্রতি শরীয়তপুরের এক অসহায় সাংবাদিক পিতার সন্ধান পাই। পরে তাকে নিয়ে বাংলাদেশ টাইমসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ টাইমস-এর প্রকাশক ও ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের সিইও আবেদ মনসুরের কথামতো এক লাখ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করার উদ্যোগ নেই। এরই ধারাবাহিকতায় আজ জিহাদুলের বাবার কাছে এক লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।’

'টিকা থেকে পায়ে ক্যান্সার' জিহাদুলকে বাঁচাতে প্রয়োজন ১২ লাখ টাকা

বাংলাদেশ টাইমসের কাছ থেকে এক লাখ টাকার চেক পাওয়ার পর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ইয়াকুব বেপারি।

এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ টাইমস শুধু নিউজ করে থেমে থাকে নাই। আমাকে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছে।’

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় আমার প্রিয় সন্তানকে হারাতে বসেছি। ছেলের চিকিৎসার জন্য ১২ লাখ টাকা প্রয়োজন। টাকা পেলে ছেলেটাকে বাঁচাতে পারব। তাই সমাজের সম্পদশালী মানুষের কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনারা আমার একমাত্র সন্তানকে বাঁচান।’

চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ টাইমসের জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক খলিলুর রহমান স্টালিন, নিজস্ব প্রতিবেদক তানভীর রায়হান, সহ-সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, আশরাফ সিদ্দীকি, আরমান হেকিম প্রমুখ। 

জিহাদুলকে কোলে নিয়ে বাবা ইয়াকুব বেপারি ও পাশে মা জান্নাতুল আক্তার

জিহাদুলের ক্যান্সারের বিষয়ে যা জানা যাচ্ছে

ক্যান্সার আক্রান্ত জিহাদুল ইসলামের বয়স তিন বছর সাত মাস। সে শরীয়তপুর সদর উপজেলার স্বর্ণঘোষ গ্রামের বাসিন্দা ইয়াকুব বেপারির ছেলে। তার পিতা স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক। মা জান্নাতুল আক্তার একজন গৃহিনী।

ইয়াকুব বেপারি জানান, জিহাদুল তাদের একমাত্র সন্তান। তার জন্মের পর ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া গ্রামের টিকাদান কেন্দ্রে এক চিকিৎসক তার ছেলের ডান পায়ে হামের শেষ ডোজের টিকা দেন। ওই টিকা দেয়ার কিছু দিন পরে জিহাদুলের পা ফুলে যায়। শুরু হয় যন্ত্রণা। ব্যথা তীব্রতর হতে থাকলে স্থানীয় হাসপাতালের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয় জিহাদুলকে। কিন্তু যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলেনি জিহাদুলের। পরে ঢাকায় চিকিৎসা করাতে আনার পর জিহাদুলের ক্যান্সার ধরা পড়ে। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেখানো হয়। তাদের পরামর্শে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি ভারতের চেন্নাইয়ে ভেলোর সিএমসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জিহাদুলকে। সেখানকার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ড. লেনি গ্রেস ম্যাথিউর অধীনে জিহাদুলের চিকিৎসা শুরু হয়।

ড. লেনি গ্রেস ম্যাথিউর বরাত দিয়ে ইয়াকুব বেপারি জানান, জিহাদুলের চিকিৎসা করাতে হলে হাসপাতালে ১৫ মাস থাকতে হবে। এই ১৫ মাসে চিকিৎসা বাবদ খরচ হবে ১২ লাখ টাকা।

এত টাকার ব্যবস্থা করা ইয়াকুবের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না, তাই তিনি ছেলেকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। টাকার অভাবে জিহাদুলের ক্যান্সার নিরাময়ে হোমিওপ্যাথির চিকিৎসা করাচ্ছেন ইয়াকুব বেপারি। কিন্তু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় জিহাদুলের ব্যথা খানিকটা কমলেও পা আগের চেয়ে বেশি ফুলেছে বলে জানিয়েছেন ইয়াকুব বেপারি।

সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন

ছোট্ট জিহাদুলের চিকিৎসার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন তার পরিবার। জিহাদুলের বাবা ইয়াকুব বেপারির সঙ্গে যোগাযোগ ও আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে নিচের ঠিকানা ও ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

যোগাযোগ:

 ইয়াকুব বেপারি

গ্রাম: স্বর্ণঘোষ

ডাকঘর: দালুকা

উপজেলা: শরীয়তপুর সদর

জেলা: শরীয়তপুর

মোবাইল ফোন নম্বর : ০১৯১৭-৩৮৭০১০ (বিকাশ)

 

 

 

টাইমস/কেআরএস/এসআই

Share this news on: