কোনো দলকে ভাঙার ইচ্ছে আ.লীগের নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যার যার দল সে সে করুক। কোনো দলকে ভাঙার ইচ্ছে আওয়ামী লীগের নেই। আওয়ামী লীগ একাই একশ।

শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সদ্য সমাপ্ত ব্রুনাই সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সরকার টানা তিন বার ক্ষমতায় থাকার কারণে সুবিধাভোগীদের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে দল থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের একমাত্র দল আওয়ামী লীগ; যারা তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলার কারণে তাৎক্ষণিক কাউকে দল থেকে বের করে দেওয়ার সুযোগ নেই।’

এ সময় প্রশ্নকারীর কাছে সুবিধাভোগীদের একটি তালিকাও চান প্রধানমন্ত্রী।

খালেদা জিয়ার প্যারল নিয়ে সরকারের কোনো আগ্রহ আছে কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদাকে প্যারলে মুক্তি পেতে হলে আগে আবেদন করতে হবে। কিন্তু তিনি আবেদন করেননি। তাই এই বিষয়ে মন্তব্য নেই।’

বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা শপথ নিয়েছে তারা নিজেদের আগ্রহে শপথ নিয়েছে। জনগণের চাপে শপথ নিয়েছে, সংসদে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে কথা বলতে শপথ নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না।’

খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার হননি বলেও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির নির্বাচিতরা সংসদে না আসার প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, সংসদে বিরোধী দলে থেকে সরকারের ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দিয়ে সঠিক পথ বাতলে দেওয়াই আওয়ামী লীগের কাজ ছিল।

ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নুসরাতের বিষয়টা তাৎক্ষণিক না নিয়ে সব দোষ তার উপরই পড়ত। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি।

বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেওয়ার কারণে দেশীয় ক্যাবল মাধ্যম আয় করতে পারছে না বলে অভিযোগ জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারপরও তো অনেক নতুন চ্যানেল খোলার আবেদন পড়ছে, যারা নতুন চ্যানেল খোলার জন্য আবেদন করছে আমি সবগুলো অনুমোদন দেওয়ার জন্য তথ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছি।

অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের কারণে প্রিন্ট মিডিয়ার কোনো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে না ফলে তাদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা প্রযুক্তির কারণে হচ্ছে । অনলাইন পত্রিকাকে দোষারোপ করে লাভ নেই। তাছাড়া অনেক নামি পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেলেও তারা অনলাইন মাধ্যম চালু রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রীলংকায় গীর্জায় হামলাকারী জঙ্গিরা মুসলমান বলে জানা যায়। এর আগে নিউজিল্যান্ডে হামলাকারী জঙ্গি ছিল খ্রিস্টান। আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি জঙ্গিবাদের কোনো ধর্ম নেই।

বিবিসির এক রিপোর্টের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে বিবিসিতে একটি রিপোর্ট করা হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খ্রিস্টানরা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। তারা কিসের উপর ভিত্তি করে এই রিপোর্ট করেছে তা আমার জানা নেই। তারা কোনো খ্রিস্টানকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুক তারা কেমন আছে?

তিনি বলেন, আমার নিজের বাড়িতে অনেক খ্রিস্টান মেয়ে আছে যাদের আমি বিয়ে দিয়েছি। বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মুসলমান তারা সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে একই সাথে বসবাস করছে ।

যারা এসব অপপ্রচার চালান তাদের কাছে কৈফিয়ত চাওয়ার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

 

টাইমস/এএইচ/জেডটি

Share this news on:

সর্বশেষ