‌‍‍'ছেলের জন্য সাজানো নিয়োগ, লজ্জা, ভিসি লজ্জা'

‌‍‍"ছেলের জন্য সাজানো নিয়োগ, লজ্জা, ভিসি লজ্জা", ‍"ভিসির পদত্যাগ চাই!", "অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ মানি না, মানব না", "প্রশ্নফাঁসের এ নিয়োগ কাদের জন্য" ইত্যাদি স্লোগান লেখা পোস্টার সেটে আন্দোলনে নেমেছেন মেডিকেল অফিসার নিয়োগে অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীরা।

পরীক্ষার্থীদের দাবি, মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায় মারাত্মক অনিয়মের হয়েছে। তাই পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষা, ফলাফল বাতিল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার পদত্যাগ চান।

এ দাবিতে সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো তারা ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করেছেন।

ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে নজিরবিহীন অনিয়ম হয়েছে। ভিসি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ তাদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে পরীক্ষার ফলাফলে টেম্পারিং করা হয়েছে বলে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা দাবি করছেন।

বিভিন্ন কোর্সে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন তারা এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়েই তাদের চাকরি হবে বলে প্রত্যাশা করেছিলেন। লিখিত পরীক্ষাও তাদের ভালো হয়েছে। অনিয়মের কারণেই বাদ পড়েছেন বলে মনে করছেন তারা।

অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাস ও ভিসির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা ও বিএসএমএমইউ’র অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। ভিসি তার কার্যালয়ে নেই বলে জানা গেছে।

২০০ মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ২০ মার্চ। ফলাফল প্রকাশিত হয় রোববার। ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার ও ২০ জন ডেন্টাল চিকিৎসক পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন।

প্রতি  পদের জন্য লিখিত পরীক্ষায় ৪ জনকে পাস করানো হয়। এ হিসাবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। চূড়ান্ত নিয়োগের লক্ষ্যে তাদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হবে।

ফলাফল ঘোষণার পরপরই সুযোগ বঞ্চিত চিকিৎসকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

বিএসএমএমইউ’র ভিসির প্রতিক্রিয়া জানতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিএসএমএমইউ রেজিস্ট্রার ডা. মো. আবদুল হান্নান জানান, পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশিত হয়।

ফলাফল প্রকাশের পর গণমাধ্যমকর্মীদের অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পূর্ণ মেধারভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। মেধাবীরাই চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না।’

সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ২০টি মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা ছাড়াই তাদের নিয়োগ নিতে সাবেক ও বর্তমান ভিসির ওপর চাপ দিতে থাকেন। প্রায় ৯ মাসব্যাপী তারা আন্দোলনের নামে দফায় দফায় ভিসির অফিস, বাসভবন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও ও ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হলে তিনি কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার না করতে নির্দেশনা দেন।

চাকরিবঞ্চিত চিকিৎসকরা দাবি করছেন, ফলাফল প্রকাশে অনিয়ম না হলে তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি পাবেন।
 

টাইমস/এসআই/টিএইচ

Share this news on: