বাস্তুচ্যুত মুসলমান জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমারে তাদের অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোতে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার ভোরে সৌদি আরবের মক্কার সাফা প্যালেসে ইসলামি দেশগুলোর জোট ওআইসির চতুর্দশ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ আহবান জানান।
অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও বাস্তুতন্ত্র নিয়ে বর্তমান বিশ্ব যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে, তা মোকাবিলায় ওআইসিকে একটি কৌশল গড়ে তোলার আহবানও জানান তিনি, যাতে জোটের সদস্য দেশগুলো একে অন্যের জন্য কাজ করতে পারে।
শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে অতিথিদের স্বাগত জানান সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। শেখ হাসিনা সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করলে বাদশাহ তাকে স্বাগত জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সম্মেলনে ওআইসির ৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রের বাদশাহ, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন ।
সম্মেলনের শুরুতেই বক্তব্য দেন সৌদি বাদশাহ। সংস্থার মহাসচিবের বক্তব্যের পর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে ওআইসির এশিয়া গ্রুপের প্রতিনিধি হিসেবে দেয়া ভাষণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে নিপীড়িত হওয়া এবং তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমানদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমার রাখাইন অঞ্চলে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরির প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ায় রোহিঙ্গাদের সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন এখনও অনিশ্চিত।
মার্চে আবুধাবিতে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিচার সম্পর্কিত ইস্যুটি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রক্রিয়াটি নিয়ে আসার জন্য আমরা গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানাই। স্বেচ্ছায় তহবিল এবং কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে মামলাটি চালু করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহের কাছে আবেদন করছি।’
ওআইসির চতুর্দশ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার বিকালে জাপান থেকে সৌদি আরবে পৌঁছেন শেখ হাসিনা। শনিবার সন্ধ্যায় ওমরাহ পালন করবেন শেখ হাসিনা। রোববার মদিনায় হযরত মুহাম্মদ (স.) এর রওজা জিয়ারত করবেন তিনি।
সোমবার ভোরে ফিনলান্ডের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার। ফিনল্যান্ড সফর শেষে ৮ জুন দেশ ফিরবেন তিনি।
টাইমস/জিএস