উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতা নিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
পাঁচ ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পরদিন বুধবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এই প্রতিক্রিয়া জানান মাহবুব তালুকদার। ‘উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে আমার কথা‘ শীর্ষক একটি লিখিত বক্তব্য তিনি সাংবাদিকদের পড়ে শোনান।
তিনি বলেছেন, ‘এবার উপজেলা নির্বাচনে সবচেয়ে আশঙ্কার দিক হচ্ছে ভোটারদের নির্বাচন বিমুখতা। নির্বাচন বিমুখতা জাতিকে গভীর খাদের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের অনিশ্চিত গন্তব্যে বাংলাদেশ। এ অবস্থা কখনো কাম্য হতে পারে না। আমরা গণতন্ত্রের শোকযাত্রায় সামিল হতে চাই না। যথোপযুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে অবশ্যই সমুন্নত রাখতে হবে।’
সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি’র অভিযোগ তুলে বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে ৪১ শতাংশ ভোটারও ভোট দেয়নি। সব মিলিয়ে ভোটের হার ৪০ শতাংশের কিছু বেশি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, 'বিরোধীদলগুলো অংশ না নেয়ায় এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ছিল একতরফা। একতরফা নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। গণতন্ত্রের অর্থ হচ্ছে ক্ষেত্রবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠের অভিমত এবং তা বহুত্ববাদের ভেতর থেকে উৎসারিত হতে হয়।'
মাহবুব তালুকদার বলেন, 'একতরফা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠের কোনো অভিব্যক্তি প্রতিফলিত হয় না বলে এর কোনো ঔজ্জ্বল্য থাকে না। নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণের ক্ষেত্র তৈরিতে উপযুক্ত পরিবেশ অপরিহার্য। কিন্তু আমরা ক্রমাগত একতরফা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, যা গণতন্ত্রের জন্য অনভিপ্রেত।'
মাহবুব তালুকদার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যদের প্রভাব খাটানোর ইঙ্গিতও করেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, 'উপজেলা নির্বাচন সংসদ সদস্যদের আওতামুক্ত না হলে তা কখনো অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাদের উপদেষ্টার ভূমিকা উপজেলা পরিষদের কৌলীন্য বিনষ্ট করেছে। কোনো কোনো সংসদ সদস্য আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বা সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠিয়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে হয়েছে।'
টাইমস/এসআই