বরগুনায় স্ত্রীর সামনে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড (২৫) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার ভোররাত সোয়া ৪টার দিকে বরগুনা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পূর্ব বুড়িরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বরগুনা সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে নয়নকে গ্রেপ্তারের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল্লাহ তাহেরের নেতৃত্বে পূর্ব বুড়িরচর গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে নয়ন ও তাঁর সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি ছুড়লে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে একজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এটা নয়ন বন্ডের লাশ বলে স্থানীয় লোকজন শনাক্ত করে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় চারজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শাজাহান হোসেন, এসআই মনিরুজ্জামান, এসআই হাবিবুর রহমান ও কনস্টেবল হাবিব। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি তাজা গুলি, তিনটি রামদা ও তিনটি গুলির খোসা জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
এর আগে বুধবার (২৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাতকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়।এসময় স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বারবার প্রতিহতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এদিকে হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
পরে ২৭ জুন রিফাত শরীফের বাবা মো. আ. হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ ১২জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় সোমবার পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে চন্দন (২১), মো. হাসান (১৯), অলিউল্লাহ (২২) টিকটক হৃদয় (২১) এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার পরের দিন সকালে চন্দনকে, সন্ধ্যার মো. হাসান গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার বরগুনা থেকে অলিউল্লাকে (২২) এবং ঢাকা থেকে টিকটক হৃদয়কে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য পাঁচজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন নাজমুল ইসলাম (১৮), সাগর (১৯), তানভীর (২২), কামরুল হাসান ওরফে সাইমুন (২১)। অপর একজনের নাম পুলিশ প্রকাশ করেনি।
আরও পড়ুন...
বরগুনায় প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
টাইমস/এইচইউ