খুলনার ডুমুরিয়ায় স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমা মঞ্চ। যা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। ডুমুরিয়া সদরের কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি ও মঠ মন্দিরে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এখানে দুর্গোৎসবের প্রচলিত রীতির দুর্গা, অসুর, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর প্রতিমা স্থাপনের বাইরে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ধর্মীয় বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী। একে একে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ১২৫টি প্রতিমা।
ডুমুরিয়া সদরের প্রাচীন হাটের দক্ষিণ পাশে ভদ্রা নদীর পাড়ে প্রতিষ্ঠিত ডুমুরিয়া কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি ও মঠ। সেখানকার মন্দিরে তৈরি করা হয়েছে পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি অর্ধডিম্বাকৃতির মঞ্চ। সেই মঞ্চের পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্ত থেকে উত্তর দিকে প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। একেকটি প্রতিমায় একেকটি পৌরাণিক কাহিনী ফুটে উঠেছে। প্রতিমাগুলো রংতুলির আঁচড়ে হয়ে উঠেছে জীবন্ত। পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি মঞ্চটিকেও রং করে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে।
এ মন্দিরের দেবী দুর্গা, অসুর, কার্তিক গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর প্রতিমার পাশাপাশি তাদের বাহন সিংহ, মহিষ, ময়ূর, ইঁদুর, পেঁচা, রাজহাঁস স্থাপন করা হয়েছে। মূল মন্দিরে এসবের পাশাপাশি পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে আরও ২৫টি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। ডুমুরিয়ার এ মন্দিরের প্রতিমা তৈরির কারিগর সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার অনীল কুমার ভাস্কর।
ডুমুরিয়া কেন্দ্রীয় কালিবাড়ি মঠ ও মন্দির কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তুষার কান্তি দত্ত জানান, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার পদ্মা সেতুর আদলে মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেই মঞ্চের ওপর তারা প্রতিমা স্থাপন করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিজয়া পঞ্চমীর মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। খুলনায় এবার ৯৫০টি স্থানে পালিত হচ্ছে এ উৎসব। শুক্রবার শঙ্খ আর উলুধ্বনির মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে বিজয়া ষষ্ঠী পালন করা হবে।
খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মহানগর ও জেলায় ৯৫০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। মহানগরের আট থানায় ১২৯টি ও জেলার ৯ উপজেলায় ৮২১টি মন্দির রয়েছে। গত বছর মহানগর এলাকা ও জেলার ৯টি উপজেলা মিলিয়ে ৯৩১টি মণ্ডপে পূজা হয়েছিল। গত বছরের চেয়ে এবার ১৯টি মণ্ডপ বেড়েছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, পূজার সময় পটকা বা বাজি ফোটানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। নামাজের সময় মাইক বাজানো বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। উঠতি বয়সী ছেলেদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, বিভাগের পূজামণ্ডপগুলোতে পুলিশের ছয় হাজার সদস্যসহ আনসার বাহিনী মিলে ৪৬ হাজার ৪৪৮ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিযুক্ত হয়েছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা পরিদর্শন করছেন। এছাড়া যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিসসহ স্পেশাল টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
টাইমস/এইচইউ