তারকাদের গোপনীয়তা ও কিছু কথা

আমাদের ছোট বেলায় তথ্যের এমন অবাধ প্রবাহ ছিল না। তাই হয়তো অনেক কাহিনি চোখে পড়ে নাই। যখন থেকে হালকা পাতলা বুঝতে শিখেছি তখন আমার কাছে সবচেয়ে আলোচিত ক্যারেক্টার ছিল প্রিন্সেস ডায়ানার রগরগে কাহিনি।

সেই সময়ে ব্রিটিশ ছাড়াও সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তার প্রেম ও প্রণয় কাহিনি। ডায়ানা আর দোদি আল ফায়েদের অন্তরঙ্গ অনেক ছবি এখনো ইন্টারনেট দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ায়। এই জুটির সবচেয়ে রগরগে ছবি পেতে সেই সময়ই মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করেছিল ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘মিরর’। অবশ্য প্রিন্স চালর্স আর তার পরকীয়া প্রেমিকা ক্যামেলিয়া পার্কারের নানা কাহিনি আর অন্তরঙ্গ ছবি কে কার আগে প্রকাশ করতে পারবে তা নিয়েও ছিল ব্যাপক প্রতিযোগিতা। কই ভাই তাদের কাহিনি পড়তে বা ছবি দেখতে নৈতিকতায় বাধেনি? বা ওই দেশ আর সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি?

পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একসময়ের বিখ্যাত প্লেবয় ইমরান খান যখন জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করল সেই সময়ও পাকিস্তানি আর ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো অন্তত ১০ জন নারীর সাথে ইমরানের খুবই ঘনিষ্ঠ ছবি প্রকাশ করে। সেই সময়ের নিউজগুলো দেখলে বুঝবেন যেন ইমরানের নয়া বিয়া ভাঙার জন্য মিডিয়া উঠে পড়ে লেগেছিল। ইউটিউবে গেলে এখনো ইমরানের এমন কয়েকশ ভিডিও পাবেন।

পাশের দেশ ভারতের কথাই বলি। বলিউডের নায়ক-নায়িকাদের কে কাকে ধরল, কারে কখন ছাড়ল তার কিছুই তো বাদ দেন না, পড়তে কিংবা দেখতে। ড্রিম গার্ল হেমা মালিনি থেকে শুরু করে কারিনা কাপুর-সাইফ আলি খানের ছবি ভিডিও কোনোটাই দেখা কিন্তু বাদ দেন নাই। হাল আমলের কথায় আসি। ৪৫ বছরের বুড়ি মালিকা অরোরা তার ছেলের বয়সী অর্জুন কাপুরের সাথে কোন নাইট ক্লাবে গেল, কার বাসায় ঢুকল, সুইমিংপুলে দুইজনে ক্যামনে ভিজল এগুলোর একটাও বাদ দেন নাই । আবার ওই সব দেশের গণমাধ্যম সেগুলো প্রচার এবং প্রকাশ করেই যাচ্ছে। তখন কিন্তু কেউ জ্ঞান দেয় না।

মার্কিনিরা অবশ্য এই ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে। বিল ক্লিনটন-মনিকা লিউনস্কি কখন কোথায় ক্যামনে কি করছে এইগুলো আবার মনিকাকে টিভিতে নিয়ে রসায় রসায় বলাইছে। আর ট্রাম্পের কাহিনি তো আপনারা জানেনই। সিএনএন ট্রাম্পের সাথে সহবাস করা এক দেহ ব্যবসায়ী নারীর ইন্টারভিউ করতে ওই নারীকে ৬ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। বিনিময় কিছু ছবি আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে তার দৈহিক মিলনের বর্ণনা দিয়েছে। এমনকি ট্রাম্প যে বেশি সক্ষম না এমন কথাও মিডিয়া প্রচার করতে ছাড়েনি।

ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকুনির ক্ষেত্রে রসালো অনেক ভিডিও মূল ধারার গণমাধ্যম প্রচার করেছে।

অত দূরে না যাই। আমাদের সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ সাহেবের কম কাহিনি আপনারা লিখেছেন। ছবি পান নাই বলে প্রচার করতে পারেন নাই। নাইলে তো তাকে গাবতলির হাটে বিক্রি করে দিতেন। হ্যাপি-রুবেলের কাহিনিসহ আরও শতাধিক ঘটনা আছে।

এত কথা বললাম, সারা দুনিয়ার উদাহরণ দিলাম। একটাই কারণ। কারণ, পাবলিক ফিগারদের দেখে মানুষ শিখে। তাদের নিয়ে আলোচনা যেমন করতে পারেন, তেমনি সমালোচনা করার অধিকারও আপনার আছে।

‘ইটস নান অব ইউর বিজনেস’ বলে বেড়াচ্ছেন যারা, তাদের বলি। এগুলো অবশ্যই আমাদের বিজনেস। শুধু বিজনেসই নয় এগুলো অবশ্যই নিউজ। সারা বিশ্বেই তাই হয়। পাপারাজ্জি বলে একটা ল্যাটিন শব্দ আছে। যদি এটার সাথে পরিচয় না থাকে তবে গুগল করে জেনে নিয়েন। আর জ্ঞান দেয়া বন্ধ করেন।

একটা উদাহরণ দেই। এরশাদ সাহেব রওশন ম্যাডামের সাথে সুখে শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন এটা কখনো নিউজ হয় নাই। কিন্তু উনি বিদিশার সাথে থাকছেন, পোলা পয়দা করছেন এগুলোই সংবাদ হইছে। মানুষের আগ্রহ আছে এমন যে কোনো কিছুই এখন সংবাদ হয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

লেখক: সাজিদ হক সৌম্য

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: