ব্রিটিশ রানী, তাবলিগ জামাত ও খুনোখুনি

ব্রিটেনের রানী একবার স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে নির্দেশ দেন তাবলিগ জামাত সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিতে। তখন ইউরোপ-অস্ট্রেলিয়া-আমেরিকায় তাবলিগ ইজতেমায় বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন যাওয়া শুরু করেছে। বিষয়টি ব্রিটিশদের নিরাপত্তায় কোনো হুমকির আলামত কিনা তার আলোকে রানী ওই নির্দেশ দিয়েছিলেন।

গোয়েন্দারা কঠিনতর তদন্ত-অনুসন্ধান শেষে রিপোর্ট পেশ করেন। রিপোর্টের সারবস্তু ছিল তাবলিগের লোকজন যে বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তার সঙ্গে জমিনের উপরের কিছুর সম্পর্ক নেই। এর সবই জমিনের নিচের বিষয়, মানে কবরের জিন্দেগানি সম্পর্কিত। আরও বিশদভাবে বলতে গেলে মৃত্যুর পরে আখেরাতের জীবনে সাফল্যের জন্য তারা মশগুল থাকেন।

এমন রিপোর্টে ব্রিটিশ রানী খুশি হয়েছিলেন বলে ধারণা করা যায়। কমপক্ষে তিন যুগ আগে এক বড় ভাইয়ের মুখে শুনেছি তাবলিগ বিষয়ে ব্রিটিশ রানী আর স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের ওই কিস্যা (সত্য-মিথ্যার দায় আমার না)।

যাই হোক, আমার তখনকার কিশোর মনও একই ধারণা পোষণ করত, এমনকি অন্য আরও লাখো-কোটি মানুষেরও হয়ত এমন ধারণা ছিল। কিশোর মন বলবো কেন, বছর কয়েক আগেও এই ধারণা ছিল।

প্রসঙ্গত, তাবলিগের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত কাকরাইল মসজিদ অনেকের কাছে ‘রুহানি হাসপাতাল’ হিসেবে পরিচিত। তবে এখন দেখছি পরিস্থিতি ভয়াবহ। তাদের কেউ কেউ জমিনের নিচের বিষয় ছেড়ে জমিন ও তার উপরিভাগ অর্থাৎ দুনিয়াবি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এমনকি তারা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে ভয়াবহ মারামারি ও প্রতিপক্ষের মানুষ খুন পর্যন্ত করে ফেলছেন।

কবরের জিন্দেগানির সুখ-শান্তি হারানো আর কঠিনতর আযাবের ভয়ে যারা ছোটখাট গুনাহও ত্যাগ করার ফিকিরে মশগুল থাকতেন, সেই তারা এখন নিজেদের সাথী ভাইদের হত্যার মাধ্যমে কবরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছেন!

শনিবার টঙ্গীর তাবলিগ জামাতের মাঠে দু’পক্ষের মারামারিতে একজন নিহত ও পাঁচ শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। তারাও দেখিয়ে দিলেন শেষ পর্যন্ত!

হে পরম করুণাময়, সবাইকে সুমতি দান করুন।

 

লেখক: আহ্সান কবীর, অতিথি লেখক।

Share this news on: