নতুন সড়ক পরিবহন আইন ও যান চলাচল বন্ধ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সমস্যাটা হলো সরকার তো মনে করে না এসব বিষয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে। সড়ক আইনটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা উচিত। আইন শক্ত হওয়া উচিত। পাশাপাশি আইনের প্রয়োগও থাকতে হবে।
বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকারগুলো বরাবরই কোটারি শ্রমিক শ্রেণির কাছে জিম্মি হয়ে থাকে। তবে সরকার যে সড়ক আইন করেছে, তা বাস্তবসম্মত হয়নি। আলাপ–আলোচনা করার পর বাস্তবায়ন করা হলে শ্রমিকদের মধ্যে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, তা হতো না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার তাদের ব্যর্থতা দিয়ে আর কত ইস্যু সৃষ্টি করবে? একটা সরকার যখন জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচিত হয়, তখন সর্বক্ষেত্রে তার ব্যর্থতাগুলো ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকে। যারা পুলিশ প্রশাসন বা অন্যান্য বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, ধীরে ধীরে সেই নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতের বাইরে চলে যায়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে যে রাজনৈতিক দলটি সব সময় গণতন্ত্রের কথা বলেছে, সেই দলটিই একবার ১৯৭৫ সালে আর এখন ধীরে ধীরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। তারা একটা অভিনব পদ্ধতিতে ছদ্মবেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা নিয়ে চলে এসেছে। তাদের নেতারা ব্রিটিশ-পাকিস্তান আমলে আন্দোলন করেছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রধান বিষয় হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম। এই বিষয়গুলো পুরোপুরিভাবে চলে গেছে। পার্লামেন্ট বলতে আর কিছুই নেই। সেখানে একদল ছাড়া দুই দল বলতে কিছুই নেই। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এ ধরনের একটা দলের পক্ষে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত কঠিন কাজ।
এত সংকটের পরও মানুষের প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে না কেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, একটা ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর পক্ষে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে লড়াই করা খুব কঠিন হয়ে যায়। এরপরও প্রতিরোধ আস্তে আস্তে তৈরি হচ্ছে। আমার বিশ্বাস, গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘লবণ-পেঁয়াজ–সংকট সরকারের ব্যর্থতার ফসল। সরকার কেন জানল না লবণ-পেঁয়াজের এ সমস্যা হবে। এর কারণ এসবের দিকে তাদের নজর নেই। তাদের নজর শুধু মেগাপ্রজেক্ট তৈরি করবে, টাকা বানাবে। টাকা বানিয়ে বিদেশে পাচার করবে। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি বলছে, দেশ থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে।’
এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সহসভাপতি নুর ই শাহদাৎ, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
টাইমস/এসআই