বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যে পরিত্যক্ত কারাগারে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, তার চারপাশে কেমিক্যাল বিস্ফোরকের ডিপো রয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
এসময় উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশন থেকে নাজিমুদ্দিন রোডের কারা প্রকোষ্ঠের দূরত্ব মাত্র দেড়শ থেকে দুইশ মিটার। গত বুধবার রাতভর ওয়াহেদ ম্যানশনের আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর বিস্ফোরণ ঘটেছে। আতঙ্কিত মানুষ দিগ্বিদিক ছুটেছে, আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছে। আগুন এক ভবন থেকে আরেক ভবনে ছড়িয়ে পড়ছিল।
‘তখন আমরা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ি পরিত্যক্ত কারাগারের একমাত্র বন্দী দেশনেত্রীকে নিয়ে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। তাকে যখন কারাগারে নেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি হেঁটে কারাগারে ঢুকেছেন। এখন তিনি হুইল চেয়ারে করে আদালতে আসা-যাওয়া করেন। ঘটনাস্থলের অল্প দূরত্বে গত বুধবারের রাতটি নির্ঘুম উৎকণ্ঠায় কেটেছে খালেদা জিয়ার। আর আমরা গভীর উৎকণ্ঠা নিয়ে মহান আল্লাহর কাছে তার নিরাপত্তার জন্য দোয়া করেছি। তাকে অশুভ উদ্দেশ্যে ভয়াবহ বিপজ্জনক পরিবেশে বন্দী করে রেখেছে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী।’
তিনি বলেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) হিসেবে পুরান ঢাকায় দুই হাজারেরও বেশি কলকারখানা এবং ২২ হাজার গুদাম ও দোকান রয়েছে। সরকার পুরান ঢাকায় আট শতাধিক অবৈধ রাসায়নিক গুদাম এবং কারখানা চিহ্নিত করেছে।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, লাশের সন্ধানে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের অবৈধ গোডাউনের সন্ধান পেয়েছেন। তারা বলেছেন, কোনোভাবে আগুন একবার নিচের দিকে গেলে এমনভাবে বিস্ফোরণ ঘটত, যা পুরো ভবনটিকে উড়িয়ে নিয়ে যেত। তখন এই আগুন ১০০ থেকে ২০০ মিটারজুড়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ত। সে ক্ষেত্রে কী ঘটত জানি না।
‘তখন কারাগারে আটক দেশনেত্রীর কি হতো, তা একমাত্র মহান আল্লাহ জানেন। বেগম জিয়ার কারাগারের চারদিকে রাসায়নিক পদার্থের গুদাম, কারখানা ও দোকানে ভরা—এটা ভাবলেই গা শিউরে ওঠে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে কেন এ ধরনের শ্বাসরোধী পরিবেশে আটকে রেখেছেন? কেন তার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন? আপনাকে এ রকম বিস্ফোরণোন্মুখ বারুদের মাঝে বন্দী রাখা হলে কেমন লাগত?
টাইমস/জেডটি