শরীর খুব খারাপ: খালেদা

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাভোগ করছেন। রোববার দুপুরে নাইকো দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য হুইল চেয়ারে করে আদালতে আসেন তিনি।

আদালতকক্ষে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এজলাসে প্রবেশের পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানতে চান মির্জা ফখরুল।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘না, আমার শরীর ভালো যাচ্ছে না। শরীর খুব খারাপ।’ খালেদা জিয়ার কাছে ফখরুল জানতে চান, ‘থেরাপি ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে কি না।’

খালেদা তখন ফখরুলকে জানান, কারাগারে তাকে দেখতে চিকিৎসক এসেছিলেন। কিন্তু তার শরীর ভালো যাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার সঙ্গে যখন ফখরুল ইসলাম কথা বলছিলেন, এর কিছুক্ষণ পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এজলাসে আসেন।

এজলাসকক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বসেন খালেদা জিয়ার ঠিক বাঁ-পাশে। তখন থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন মির্জা ফখরুল।

প্রায় এক ঘণ্টা শুনানি শেষে বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে হুইল চেয়ারে খালেদা জিয়াকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে প্রবেশের প্রধান ফটক পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যান।

খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথাও হয়েছে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা চিন্তিত। চিকিৎসকদের কাছ থেকে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়ার রক্ত নেওয়া হয়নি। তিনি ডায়াবেটিস রোগী। এ ব্যাপারেও যথাযথ চিকিৎসা তিনি পাচ্ছেন না।’

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আলাপ হয়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। সরকার দুরভিসন্ধি করে জামিন দিচ্ছে না।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। আসামিপক্ষ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে হাইকোর্ট ওই বছরের ৯ জুলাই এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং রুল দেন। প্রায় সাত বছর পর ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তি করেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন খালেদা জিয়া।

১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করে এজলাস ত্যাগ করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়া গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
উপজেলা নির্বাচনকালে আ.লীগের সব রকম কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ : কাদের Apr 20, 2024
img
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন : ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪০৭ Apr 20, 2024
img
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা Apr 20, 2024
img
মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা : জাতিসংঘ Apr 20, 2024
img
শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক ডিপজল Apr 20, 2024
img
তীব্র তাপপ্রবাহ : প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার নির্দেশ Apr 20, 2024
img
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি Apr 19, 2024
img
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীদের তালিকায় আলিয়া Apr 19, 2024
img
পালিয়ে আসা ২৮৫ জনকে ফেরত নিচ্ছে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী Apr 19, 2024
img
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার শঙ্কায় নেতানিয়াহু, ইসরায়েলে জরুরি বৈঠক Apr 19, 2024